নিরাপত্তাকর্মী নিহতের জেরে মহাসড়ক অবরোধ, চার বাসে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুর
ফাইল ছবি

গাজীপুর মহানগরীর তারগাছ এলাকায় বাসচাপায় পোশাক কারখানার এক নিরাপত্তাকর্মী নিহতের জেরে যাত্রীবাহী ৪ বাসে আগুন দিয়েছে ওই কারখানার শ্রমিকরা।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্নাফ মালিথার (৫৫) বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার অনন্ত ক্যাজুয়ারের নিরাপত্তা কর্মী ওই কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় আজমেরী গ্লোরী নামের একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে চারটি আজমেরী বাসে আগুন দিয়ে বেশ কয়েকটি ভাঙচুর করেছে।

স্থানীয় সূত্রে ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, রাত ৮টায় কারখানা ছুটির পর নিরাপত্তা প্রহরী লাল নিশান হাতে নিয়ে গাড়ি থামিয়ে শ্রমিকদের নিরাপদে মহাসড়ক পার করার ব্যবস্থা করছিলেন।

এসময় ঢাকাগামী আজমেরী পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সময় আজমেরী পরিবহনের আরো তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে এবং কয়েকটি বাস আটক করে ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে উত্তেজিত শ্রমিকরা দমকল বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড ম্যানেজার (এডমিন) আবুল হোসেন বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ছুটি হওয়ার পরে রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগতিতে আসা আজমেরী পরিবহন তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। সঙ্গে সঙ্গে তার সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেডের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তারগাছ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আজমেরি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়াও একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহিন আলম বলেন, টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ২টি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ইট, পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের এএসপি মোশারফ হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আলোচনার মাধ্যমে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। আপাতত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আলী মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদেরকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। নিহতের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

শেয়ার করুন