তাইওয়ানের কাছে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ও রেডারের ৩৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের খুচরা যন্ত্রাংশের সম্ভাব্য বিক্রির বিষয়টি অনুমোদন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে শনিবার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এক স্পর্শকাতর সফর শুরু করার একদিন আগে শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন সম্ভাব্য অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি অনুমোদনের কথা জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন ও তাইপের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও চীনের মালিকানা দাবি করা দ্বীপ তাইওয়ানের আত্মরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আইনত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে বাধ্য। এই বিষয়টি ক্রমাগতভাবে চীনের ক্ষোভের কারণ হচ্ছে।
চীন দ্বীপটির ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে এলেও তাইওয়ান তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক চাপ বৃদ্ধি করে আসছে চীন। চলতি বছর এ পর্যন্ত দ্বীপটির আশপাশে দুইবার সামরিক মহড়া চালিয়েছে তারা। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে লাইয়ের সফরকালে বেইজিং এ ধরনের আরও মহড়া চালাতে পারে বলে নিরাপত্তা সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সফরকালে লাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ও গুয়ামে থামার কথা রয়েছে।
পেন্টাগনের ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি জানিয়েছে, এই বিক্রয়ের মধ্যে ৩২ কোটি ডলারের এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের খুচরা যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপাদান এবং অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারি রেডারর্স ও সম্পর্কিত সরঞ্জাম আছে।
পেন্টাগন জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাইওয়ানের কাছে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যমানের উন্নত মোবাইল গ্রাহক সরঞ্জামের সম্ভাব্য বিক্রিও অনুমোদন করেছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা আশা করছে এক মাসের মধ্যেই এই বিক্রি কার্যকর হবে আর ওই সরঞ্জামগুলো এফ-১৬ বহরের প্রস্তুতাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করবে, এর মাধ্যমে ‘বিশ্বাসযোগ্য একটি প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলা যাবে’ ।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, “তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা অব্যাহত রাখবে এবং তাইওয়ান প্রণালী ও ভারত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করবে।”
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে সম্ভাব্য দুইশ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছিল। এসব অস্ত্রের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউক্রেইনের যুদ্ধে পরীক্ষা করা অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম তাইওয়ানকে সরবরাহের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
লাই মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু এবং পালাউ যাওয়ার পথে শনিবার হাওয়াইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তাইপের সঙ্গে যে ১২টি দেশের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনও বজায় আছে তার মধ্যে এই তিনটি দেশও আছে। পথে তিনি গুয়ামেও যাত্রাবিরতি করবেন।
হাওয়াই ও গুয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি আছে।
শুক্রবার চীন, তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ অনুশীলন করার আহ্বান জানিয়েছে।