সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল জজিয়া। রাজধানী তিবিলিসিতে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। আর চলমান বিক্ষোভকে ‘বিপ্লবের চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
দেশটির জাতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অন্তত আটটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছে। সেইসঙ্গে পোটির কৃষ্ণ সাগর বন্দরে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় সময় রোববার (১ ডিসেম্বর) রাতেও পার্লামেন্ট ভবনের সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা আতশবাজি ছোড়েন। বিক্ষোভকারীদের হটাতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। তাতেও কাজ না হলে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেওয়ার আলোচনা স্থগিত করায় গত চারদিন ধরে এ বিক্ষোভ চলছে।
সাধারণ জনতার অভিযোগ, দেশটির বর্তমান সরকারের ওপর রাশিয়ার প্রভাব রয়েছে। তাই নতুন নির্বাচন আয়োজনের দাবি উঠেছে।
তবে জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে নতুন নির্বাচনের দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। সরকার বিরোধীদের মিথ্যাচারের শিকার হচ্ছেন তারা।
তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট সালোমে জুরাবিশভিলি বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না।
জর্জিয়ান ড্রিম সরকারকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে নতুন ভোটের আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিনি।
জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট সালোমি জোউরাবিচভিলি পশ্চিমাপন্থি হিসেবে পরিচিত। সেই সঙ্গে তিনি ইইউতে জর্জিয়ার যোগ দেওয়ার পক্ষে বরাবরই সরব। কয়েক সপ্তাহ পর প্রেসিডেন্ট পদে সালোমির মেয়াদ শেষ হবে।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে জর্জিয়ায় সাধারণ নির্বাচন হয়েছে। রাশিয়াপন্থি জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি ২৬ অক্টোবরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটে জয়ী হওয়ার দাবি করার পর থেকে জর্জিয়া অস্থিরতায় কাঁপছে৷ বিরোধীরা এ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছে।
এদিকে চলমান বিক্ষোভকে ‘বিপ্লবের চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
রোববার এক টেলিগ্রাম পোস্টে দিমিত্রি মেদভেদেভ লিখেছেন, প্রতিবেশী দেশ জর্জিয়ায় একটি বিপ্লবের চেষ্টা চলছে। যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিষয়ে আলোচনা স্থগিত করার সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি সতর্ক করেন, জর্জিয়া ইউক্রেনীয় পথ ধরে অন্ধকার অতল গহ্বরে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। সাধারণত এই ধরনের ঘটনা খুব খারাপভাবে শেষ হয়।
তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে