নাহিদ রানার আগুনে পুড়লো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জ্যামাইকা টেস্টে ১৬৪ রানের পুঁজি নিয়েও লিড পেলো বাংলাদেশ। নাহিদোর ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে ১৪৬ রানেই। তাতে করে ১৮ রানের লিড পেয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
তৃতীয় দিনের শুরু থেকেই স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। আলাদা করে বলতে হয় নাহিদ রানার কথা। তরুণ এই পেসারের নিয়মিত ১৫০-এর আশপাশে করা বলগুলো খেলতে গলদঘর্ম হয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটাররা।
দিনের শুরুতেই নাহিদ রানার বলে পরপর দুই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর তাসকিন এবং তাইজুলের বলেও দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়েছে ক্যারিবীয়রা। এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন হাসান মাহমুদ। তিনিও নেন দুই উইকেট।
নাহিদ রানার আগুনে বোলিংয়ের সামনে কুপোকাত হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। ১৪২ কিলোমিটার গতিতে ছুটে আসা বলে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি ক্যারিবীয় দলপতি। ব্যাক ফুটে গিয়ে বলটা ব্লক করার চেষ্টা করেন; কিন্তু ব্যাটের উপরের অংশে লাগিয়ে ক্যাচ তুলে দেন গালি অঞ্চলে। সেখানে নীচু হয়ে আসা ক্যাচটি তালুবন্দি করে নেন বদলি ফিল্ডার জাকির হাসান।
৩৯ রান করে ফিরে যান ব্র্যাথওয়েট। ৩৩ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিলেন তিনি। আজ মাত্র ৬ রান যোগ করতে পারলেন। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় আউট হয়ে যান ক্যারিবীয় অধিনায়ক।
এরপর ব্যাট করতে নামা কাভেম হজকে সহজ ক্যাচে পরিণত করেন নাহিদ রানা। ৪৫তম ওভারের চতুর্থ বলে পুল রতে গিয়েই ব্যাটের উপরের অংশে লাগিয়ে আকাশে বল তুলে দেন হজ। ফাইন লেগে ক্যাচ ধরতে ছুটে যান উইকেটরক্ষক লিটন। কিন্তু তার আগেই সেখানে পৌঁছান তাসকিন। কিন্তু বল বেশি ওপরে থাকায় সহজ ক্যাচটা মিস করে ফেলেন তাসকিন। তার হাত ফসকে বল পড়ে যায় মাটিতে।
এক বল বিরতি দিয়েই হজের উইকেট তুলে নেন নাহিদ রানা। এবার নাহিদ রানার চেয়ে এই উইকেটের কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি উইকেটরক্ষক লিটন দাসের। বাজপাখির মত ঝাঁপিয়ে পড়ে যেভাবে কাভেম হজের ব্যাটের কানায় লেগে ছুটে আসা বলটিকে এক হাতে তালুবন্দি করলেন, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ৩ রান করে আউট হয়ে যান কাভেম হজ।
অ্যালিক আথানাজেকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাসকিন আহমেদ। তার বলে বোল্ড হয়েই মাত্র ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ক্যারিবীয় মিডল অর্ডার। জাস্টিন গ্রিভসকেও ঘূর্ণিতে বোকা বানান তাইজুল ইসলাম। সোজা বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান। ২ রান করে আউট হন গ্রিভস।
এরপর ৫ রান করা জসুয়া সিলভাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন হাসান মাহমুদ। নিজের পরের ওভারে সেট ব্যাটার কিয়েসি কার্টিকেও (৪০) তুলে নেন এই পেসার। লাঞ্চের আগে আলজেরি জোসেফকে আউট করে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন নাহিদ রানা। ১২৩ রানে ৮ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
৮ উইকেটে ১৩৫ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারেই শামার জোসেফকে (৬) এলবিডব্লিউ করেন মিরাজ। আর শেষ ব্যাটার কেমার রোচকে (৮) এলবিডব্লিউ করে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট শিকার করেন নাহিদ রানা।
সবমিলিয়ে ৬১ রানে ৫ উইকেট নেন নাহিদ রানা। এটিই তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। হাসান মাহমুদ নেন ২ উইকেট।