গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। এতে কমেছে বাজার মূলধন।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন গত সপ্তাহে ৬৫২ কোটি টাকা কমে গেছে। তবে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে প্রথম দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ কার্যদিবসে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু পঞ্চম কার্যদিবসে আবার দরপতন হয়। এমন অস্থিরতার মধ্যে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬৬টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৮টির। আর ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৬৫২ কোটি টাকা বা দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বা দশমিক ২৫ শতাংশ।
দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৪ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৫ শতাংশ।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ১৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৩ কোটি ৩ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৯ কোটি ৩ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, আইসিবি, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, ড্রাগন সোয়েটার, গ্রামীণফোন এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক।