ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারবে বাংলাদেশ?

মত ও পথ ডেস্ক

রিয়াদ ও তানজিম। ছবি : বিসিবি

বিশ্বকাপ থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে পতনের শুরু। এর পর আর কাঙ্ক্ষিত মানে ফেরা হয়নি। ব্যাটিং-বোলিংয়ে সমন্বিত পারফরম্যান্স আর দেখা যায়নি। তাই নিজেদের পছন্দের সংস্করণ ওয়ানডেতেও আগের মতো ভালো করতে পারছেন না মেহেদী হাসান মিরাজরা। গত মাসে নিরপেক্ষ ভেন্যু আরব আমিরাতের শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের কাছেও সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে লড়াই জমাতে পারছে না। প্রথম ম্যাচে ২৯৪ রান করতে পারলেও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। টেনেটুনে ২২৭ রান করতে পেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফ সেঞ্চুরিতে। বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৭ উইকেটে ৭৯ বল বাকি থাকতে। এই খারাপ খেলার কোনো ব্যাখ্যা নেই মিরাজের কাছে। বরং পুরোনো কথার পুনরাবৃত্তি করছেন তিনি। আসলে দলের ব্যর্থতায় ইতিবাচক কথা বলার সুযোগও কম। এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই আজ সিরিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন মিরাজরা। স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য থাকবে হোয়াইটওয়াশ এড়ানো।

সেইন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কের ব্যাটিংবান্ধব কন্ডিশনেও ব্যাটিংটা ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। টপঅর্ডারে সৌম্য সরকার-লিটন কুমার দাসের ব্যাটে রান নেই। তানজিদ হাসান তামিম একই ভুলে টানা দুই ম্যাচে আউট। সুযোগ থাকার পরও হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে নিতে পারছেন না কেউ। হাফ সেঞ্চুরি করতেও ডট বলের মচ্ছব করছেন ব্যাটাররা। ফলে ম্যাচ জেতানোর মতো পুঁজি পাচ্ছেন না বোলাররা।

পেস বোলিং নির্ভর হয়ে পড়ায় দলের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে। ভালো মানের একজন বাঁহাতি স্পিনার নেই দলে। টি২০তে কিছুটা কার্যকর হলেও নাসুম আহমেদের ওয়ানডে বোলিং আন্তর্জাতিক মানের কিনা, এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং বিদেশের মাটিতে খুব বেশি কার্যকর না। লেগ স্পিনার রিশাদ আহমেদ টি২০ বিশ্বকাপে বাজিমাত করলেও ওয়ানডেতে সাদামাটা একজন বোলার।

এতে করে সমন্বিত বোলিং হচ্ছে না ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। নিজেদের দুর্বলতা আড়াল করতেই হয়তো বোলিং নিয়ে বেশি কিছু বলছেন না অধিনায়ক মিরাজ, ‘প্রথম ১০ ওভারে আমরা দারুণ বোলিং করেছি, বিশেষ করে আমাদের সেরা বোলার রানা। এই উইকেটে এই স্কোর ডিফেন্ড করা বোলারদের জন্য খুব কঠিন।’

বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতার রোগ কিছুতেই সারছে না। দেশি-বিদেশি কোচ কাজ করেও তানজিদ তামিমদের বড় ব্যাটিং খেলার মানসিকতায় নিতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে ব্যাটারদের প্রশংসা করা মিরাজ গতকাল সমালোচনায় লিপ্ত হন, ‘মাঝের ওভারগুলোয় আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। কোনো জুটি হয়নি, একের পর এক উইকেট পড়েছে। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব (তানজিম) ভালো খেলেছে, তবে ভুলটা আমাদেরই। চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ভেবেছিলাম ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। আমাদের স্কোর যথেষ্ট ছিল না, ৩০০ রানের বেশি করা দরকার ছিল।’

৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ১০.৫ ওভারে ৪ উইকেট পতনের পর ইতিবাচক ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। আফিফ হোসেন আর তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহর চেষ্টা ছিল ইনিংস মেরামতের। তিনি ডট বল বেশি খেলায় স্কোর আড়াইশ হয়নি। যদিও অধিনায়ক মিরাজের দাবি, ওয়ার্নার পার্ক ৩২০ থেকে ৩৫০ রানের উইকেট। বাংলাদেশি ব্যাটাররা এ রকম ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে খেলার অভ্যাস না থাকায় ব্যক্তিগত রান বড় হয় না। এই দুর্বলতা নিয়েই মিরাজরা আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডে খেলবেন হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কা মাথায় নিয়ে।

শেয়ার করুন