ইউক্রেইন প্রশ্নে ট্রাম্পের সঙ্গে আপোসে রাজি: রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেইন প্রশ্নে আপোস করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা এবং আপোস করতে রাশিয়া রাজি।

এমনকি ইউক্রেইন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরুর জন্যও কোনও শর্ত নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন। মস্কোয় বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় টিভিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বার্ষিক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিককে পুতিন বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। বহু বছর তার সঙ্গে কথা হয়নি বলে পুতিন উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে তার নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেইন যুদ্ধ নিমেষেই শেষ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। তবে কীভাবে তা করবেন সেটি এখন পর্যন্ত খোলাসা করেননি তিনি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এবার তিনি আলোচনায় প্রস্তুত বলে জানালেন। ইউক্রেইনের রাশিয়ার অবস্থান যে দুর্বল হয়নি বরং রুশ বাহিনী আরও এগিয়েছে তাও বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন পুতিন।

ইউক্রেইন নিয়ে কোনওভাবে আপোস করতে রাজি কিনা জিজ্ঞেস করা হলে পুতিন বলেন, তিনি ইউক্রেইনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে ইউক্রেইনের সঙ্গে আলোচনা এবং আপোসরফায় যেতে দুপক্ষেরই আগ্রহ থাকতে হবে সেকথাও স্পষ্ট করেছেন তিনি।

পুতিন বলেন, “আমরা সবসময় বলে এসেছি আমরা আলোচনা এবং আপোসরফায় রাজি। ইউক্রেইনীয়দের যারা লড়তে চায় তাদের সংখ্যা দ্রুতই শেষ হয়ে আসবে। শিগগিরই তাদের মধ্যে লড়তে চাওয়ার মতো আর কেউ থাকবে না। আমরা প্রস্তুত। কিন্তু অপরপক্ষকেও আলোচনা এবং আপোসের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত মাসে এক খবরে জানিয়েছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার দ্বার খোলা রেখেছেন পুতিন। তবে তিনি ভূখণ্ড নিয়ে বড় ধরনের কোনও ছাড় দিতে রাজি নন। তাছাড়া, কিইভ পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন পরিহার করুক, তেমন শর্তও রেখেছেন পুতিন।

কিন্তু বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে পুতিন পুরোপুরি ভিন্ন সুরেই কথা বললেন। ইউক্রেইনের সঙ্গে আলোচনার জন্য শর্ত নেই বলার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিসহ যে কারও সঙ্গেই আলোচনা করতে প্রস্তুত বলে জানান পুতিন।

তবে তিনি বলেন, যে কোনও চুক্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সেটিতে ইউক্রেইনের বৈধ কর্তৃপক্ষের সই থাকতে হবে। বর্তমানে ক্রেমলিন ইউক্রেইনের পার্লামেন্টকে বৈধ কর্তৃপক্ষ বলে গণ্য করে।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মেয়াদ বলতে গেলে পার হয়ে গেছে। তবে যুদ্ধের কারণে তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেরি করেছেন। জেলেনস্কি যদি পুনর্নিবাচিত হয়ে আসেন, তবেই তাকে চুক্তি সইয়ের জন্য বৈধ বলে গণ্য করবে মস্কো, বলেন পুতিন।

ইউক্রেইনের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি করার পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কেবল দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চুক্তি হলেই তিনি সন্তুষ্ট হবেন।

শেয়ার করুন