রাজধানী ঢাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সাবেক সভাপতির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী এবং ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক পথচারী খুন হয়েছেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ঢাকার মতিঝিলে সিবিএ নেতা আব্দুল হালিম (৬৩), আফতাবনগরে স্বামীর হাতে সুবর্ণা আক্তার মিম (২২) ও সায়েদাবাদে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কামরুল হাসান (২৩) নিহত হন।
নিহত হালিমের ছেলে ফয়সাল খান জানান, তাঁর বাবা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অফিস সহকারী ছিলেন। চাকরিতে থাকার সময় এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতিও ছিলেন। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আহলা গ্রামে। মঙ্গলবার বাবা ঢাকায় যান। বুধবার রাতে জানতে পারি, তাঁর সাবেক সহকর্মীদের হামলায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের সহকর্মী ও ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, ইউনিয়ন নিয়ে ব্যাংকের অন্য সহকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা চলছিল হালিমের। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় তিনি জিডি করেন এবং পদ ফিরে পেতে শ্রম আদালতে মামলা করেন। বুধবার রাতে মতিঝিল বিমান অফিসের গলিতে মামলা নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে সহকর্মীরা হালিমকে মারধর শুরু করেন। এতে অচেতন হয়ে পড়লে টেনেহিঁচড়ে ১০ তলায় ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে যান তারা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান হালিম।
মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সিবিএ নেতার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
আফতাবনগরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে নিহত মিমের বোন তাহমিনা আক্তার জানান, তাদের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নওডোবা থানার হাজী অসিম উদ্দিন মাতবর কান্দি গ্রামে। তারা বর্তমানে আফতাবনগর তিন নম্বর রোডের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। মিমের সঙ্গে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ব্যবসায়ী শেখ সোহেলের দুই বছর আগে বিয়ে হয়। তবে দু’জনের এটা দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের সাত মাসের ছেলে রয়েছে। সোহেল তাঁর আগের স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বলে জানালেও বিয়ের পর মিম জানতে পারেন, তাঁর আগের স্ত্রী রয়েছেন। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তাদের ঝগড়া হতো।
তিনি জানান, বুধবার রাতে বনানীর একটি ক্লাবে যাওয়ার কথা বলে মিমকে নিয়ে বের হন সোহেল। ভোরে জানতে পারি মিম আফতাবনগর নাগরিক হাসপাতালে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেখান থেকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়। মিমের স্বামী তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে গেছে বলে শুনেছি।
ঢাকার বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
হানিফ ফ্লাইওভারে ছুরিকাঘাতে নিহত কামরুল নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড়া গ্রামের ইমাম হোসেনের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে তিনি রায়েরবাগ কদমতলী থানার পাশে থাকতেন। নিহতের বাবা ইমাম হোসেন জানান, বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে যাওয়ার কথা বলে কামরুল বুধবার রাতে বাসা থেকে বের হয়। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ অংশে বাস থেকে নেমে হেঁটে নিচে আসার সময় কে বা কারা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে মুগদা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আতিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে কামরুল নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।