সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মাটিতে পুতে ফেলার হুমকি এরদোয়ানের

মত ও পথ ডেস্ক

এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান। ফাইল ছবি

সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সিরিয়ার কুর্দি মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অস্ত্র সমর্পণ না করলে, তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।

তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরে কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়াকে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সম্প্রসারিত অংশ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। পিকেকে ১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে ও এটি তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে আঙ্কারা বারবার জোর দিয়ে বলেছে, কুর্দিপন্থি ওয়াইপিজি মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে।

বুধবার তুরস্কের সংসদে এরদোয়ান বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী খুনিরা হয় তাদের অস্ত্র সমর্পন করবে, নাহয় তাদেরকে অস্ত্রসহ সিরিয়ার মাটিতেই পুঁতে ফেলা হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা সেই সন্ত্রাসী সংগঠনকে নির্মূল করবো, যারা তুরস্ক ও কুর্দি জনগণের মধ্যে রক্তের প্রাচীর তৈরি করার চেষ্টা করছে।

সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের প্রতি মার্কিন সমর্থন নিয়ে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ) ওয়াইপিজিকে সমর্থন করলেও তুরস্ক বারবার ন্যাটো মিত্রদের এই সমর্থন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

সম্প্রতি, এসডিএফের কমান্ডার মাজলুম আবদি স্বীকার করেন যে, পিকেকে যোদ্ধারা সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করেছিল। তবে তিনি এসডিএফের সঙ্গে পিকেকের সাংগঠনিক সম্পর্ক থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

উত্তর সিরিয়া ও ইরাকে সাম্প্রতিক হামলায় তুরস্ক অন্তত ২১ জন ওয়াইপিজি-পিকেকে সদস্যকে হত্যা করেছে। আঙ্কারার মতে, সিরিয়ার ভবিষ্যতে এই গোষ্ঠীর কোনও স্থান নেই। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, তারা সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

সিরিয়ার নেতৃত্বে পরিবর্তনের ফলে কুর্দি গোষ্ঠীগুলো কিছুটা পিছু হটেছে। তার মধ্যেই তুরস্কের এই হুমকি তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তাছাড়া সিরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে কুর্দি গোষ্ঠীগুলোর অস্তিত্ব ও আন্তর্জাতিক সমর্থন নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের কঠোর অবস্থান এই অঞ্চলে ভবিষ্যৎ ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স

শেয়ার করুন