সম্প্রতি সচিবালয়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বর্তমান অসাংবিধানিক ও নৈরাজ্যবাদী ইউনূস সরকারের ব্যর্থতার চরম বহিঃপ্রকাশ। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ও অনির্বাচিত সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে তারা উদাসীন।
তিনি বলেন, সচিবালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংরক্ষিত এলাকা। এখানে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর জনমনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। জনগণ মনে করে, অ্যানার্কিস্ট ইউনূস সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর আইন-কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কতিপয় উপদেষ্টা নিজেদের ইচ্ছা-অভিলাষ বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে কাজ করে চলেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে বিশাল দুর্নীতির কথা জনপরিসরের আলোচনায় উঠে আসছে। সেসব দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ বিনষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে একজন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিল, যে ম্যাটিক্যুলাস ডিজাইনের অংশ হিসেবে আন্দোলনের নামে মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ হত্যার বিষয়ে গণমাধ্যমে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ঐ সমন্বয়কের উপস্থিতি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাকে জোরালো করেছে। এছাড়া যে ভবনে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তার ৮ম তলার বারান্দায় একটি কুকুর পুড়ে মারা গেছে। ৮ম তলায় কুকুরের ওঠা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনপ্রশাসনে সংস্কারের নামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর খবরদারি করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধির খবরদারির একটি ভিডিও ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এই সরকার বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের অপচেষ্টা করছে। যা নিয়ে সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাদারিত্ব জলাঞ্জলি দিয়ে ইউনূস সরকার নিয়ন্ত্রণে নিতে পরিকল্পিতভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হতে পারে বলেও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা ধারণা পোষণ করছেন। পাশাপাশি ইউনূস সরকারের লাগামহীন ব্যর্থতা ও অপকর্ম ঢাকতে অগ্নিকাণ্ডের নাটক মঞ্চস্থ করছে কিনা সেই প্রশ্নও রাখছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, সচিবালয় একটি সংরক্ষিত এলাকা ও প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। সচিবালয়ে সিসিটিভির পাশাপাশি নাইট ভিশন ক্যামেরাও রয়েছে। সেগুলোতে ভিডিও ফুটেজ থাকার কথা। জনগণের পক্ষ থেকে আমি সেইসব ভিডিও ফুটেজগুলো জনগণের সামনে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারকে আহ্বান জানাবো জনগণের ভাষা উপলব্ধি করতে। যে সরকার সচিবালয় এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তাদের উচিত গণদাবির পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করা। অন্যথায়, বাংলার জনগণ ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবে।