প্রায় দুই দিন পর (৪৫ ঘণ্টা) সারাদেশে ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকরা। শনিবার রাতে শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম এই ঘোষণা দেন।
চাঁদপুরের মেঘনায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সারাদেশে ধর্মঘট ডেকেছিলেন শ্রমিকরা।
ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত, আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও নিহতদের পরিবারকে সহায়তা এবং নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাসে এই কর্মবিরতি থেকে সরে এসেছেন শ্রমিকরা।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছিল শ্রমিকদের ধর্মঘট। শনিবারও সারাদেশে বন্ধ ছিল সকল প্রকার পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। এতে অচলাবস্থা দেখা দেয় বন্দরগুলোতে। খালাসের অপেক্ষায় ছিল ১০ লাখের বেশি টন পণ্য। যার মধ্যে ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া জ্বালানি পণ্যও।
ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে নৌঘাট থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ ছিল। বিদেশি জাহাজ থেকে হচ্ছিল না পণ্য খালাস। এতে সারাদেশে চাল, ডাল, গম, তেলসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। তবে রোববার সকাল থেকে সবকিছুই স্বাভাবিক নিয়মে চালু হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরদিন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ। গ্রেপ্তার করা হয় আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান নামে ওই জাহাজেরই এক কর্মীকে।
পরে ইরফানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা না পাওয়া এবং মাস্টারের দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে সে সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নিজে জাহাজ চালিয়ে পালিয়ে যায়।