৭২-এর সংবিধান বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই : নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ৭২-এর সংবিধান বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে সংশোধন করা যেতে পারে।

আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আল-রাজি কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন তিনি। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের দুটি অংশ সব ভেদাভেদ ভুলে আবারও একীভূত হয়েছে বলে ঘোষণা দেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে সব ব্যবধান ভুলে গণঅধিকার পরিষদকে এক করা হয়েছে। দু-একজন এর বাইরে থাকতে পারে। তিনি আশা করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা সবাই যুক্ত হবেন।

৭২-এর সংবিধান বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে নুর বলেন, বিভিন্ন সময় সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। এটা বাতিলের প্রয়োজন নেই। বরং সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধন করা যায়।

এ সময় ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তিনি বলেন, জাতি একবারই স্বাধীন হয়। ৭১-এর সঙ্গে ২৪-এর তুলনা চলে না।

কোটা আন্দোলন ও জুলাই আন্দোলনে আহত সবাইকে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।

নুর বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা সেটিকে সর্বজনীন করার উদ্যোগ নিয়ে জাতিকে একটি বিভাজন থেকে রক্ষা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আগামীর নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে যেকোকো হঠকারী সিদ্ধান্ত দেশকে পেছনে নিয়ে যাবে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতেই দেশ চালাতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। একসঙ্গে পথ চলতে গিয়ে আমাদের মতপার্থক্য হয়েছে। সেই মতপার্থক্যের আজ অবসান ঘটতে শুরু করেছে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা অতীতের মতো একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়াদের গেজেটভুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনার সময়ে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিএনপি জামাত করার কারণে অনেকের গেজেট আটকানো হতো। ঠিক একই কায়দায় এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আটকানো হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বাদ দেওয়া দরকার। আমরা দাবি জানাচ্ছি, নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কারো গেজেট যেন না আটকানো হয়। ৪৩ বিসিএস থেকে বাদ পড়া ১৬৮ জনকে গেজেটভুক্ত না করা হলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে যদি রাজপথে নামতে হয় সেটিও আমরা করব। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনই ছিল কোটা আন্দোলনের মূল স্পিরিট। সেখানে কোনো অন্যায় বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।

২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারুক হাসান বলেন, গণঅধিকার পরিষদ তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মাঝখানে কিছু মতপার্থক্যের কারণে গণঅধিকার পরিষদ আলাদাভাবে পথ চলতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদের উভয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে গণঅধিকার পরিষদের উভয় নেতারা ঐকবদ্ধ হওয়ার তাগিদ অনুভব করার জায়গা থেকে আজকে থেকে গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গণঅধিকার পরিষদ আজকে থেকে একটিই যার ভিত্তি কোটা আন্দোলন।

এসময় গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)-এর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ, নির্বাহী কমিটির নেতারা।

শেয়ার করুন