সিরিয়ায় তুর্কিপন্থি-কুর্দি যোদ্ধাদের ব্যাপক সংঘর্ষ, নিহত শতাধিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্ক-সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠী ও কুর্দি বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে শতাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গত দুই দিনে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সংঘাতে এই যোদ্ধারা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

রোববার (৫ জানুয়ারি) সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ার মানবিজ শহরের আশপাশের কয়েকটি গ্রামে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১০১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তুরস্ক-সমর্থিত গোষ্ঠীর ৮৫ সদস্য ও কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) ১৬ সদস্য রয়েছেন।

এক বিবৃতিতে এসডিএফ বলেছে, তারা তুরস্কের ভাড়াটে সৈন্যদের তুর্কি ড্রোন ও বিমান ব্যবহার করে চালানো সব হামলা প্রতিহত করেছে। গত ২৭ নভেম্বর ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের নেতৃত্বাধীন অভিযান শুরুর মাত্র ১১ দিনের মাথায় ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ঘটে।

আসাদের পতনের পরপরই উত্তর সিরিয়ায় তুর্কি-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো আবারও এসডিএফের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। তুরস্ক-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো এসডিএফের কাছ থেকে উত্তর আলেপ্পো প্রদেশের মানবিজ ও তাল রিফাত শহরের দখল নিয়ে নেয়। তখন থেকে উত্তর সিরিয়ায় প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ চলছে। এতে উভয়পক্ষের ব্যাপক হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।

সিরিয়ান অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেছেন, তুর্কি-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো রাক্কায় যাওয়ার আগে কোবানে ও তাবকা শহরের দখল নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এসডিএফ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বের বিস্তীর্ণ এলাকা ও পূর্বে দেইর ইজোর প্রদেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধের শুরুর সময় ওই অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে কুর্দিরা সেখানে স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করে।

মার্কিন সমর্থন পাওয়া এসডিএফ বর্তমানে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাছ থেকে দখল ছিনিয়ে নেওয়ার পর রাক্কাসহ ওই অঞ্চলের বেশিরভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আঙ্কারা এসডিএফকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অনুসারী বলে মনে করে; যারা দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে এক দশক ধরে বিদ্রোহ করছে। তুরস্কের সরকার এই গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

পিকেকে যোদ্ধাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তুরস্কের সামরিক বাহিনী প্রায়ই সিরিয়া ও প্রতিবেশী ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে হামলা করছে।

এর আগে, সিরিয়ার ডি-ফ্যাক্টো সরকারের নতুন নেতা ও ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আহমেদ আল-শারা বলেছেন, এসডিএফকে দেশের সেনাবাহিনীতে একীভূত করা হবে। গত মাসে এইচটিএসের নেতৃত্বে হওয়া বিদ্রোহে আসাদ সরকারের পতন ঘটে।

সূত্র: এএফপি

শেয়ার করুন