ফরিদপুরে ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ
ফরিদপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ

ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাস পুকুরে পড়ে ৫ জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সদর উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকায় গেরদা রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়াপাড়ার সায়েম (৪০), সাদিয়া জহির (৪৫), রানা শরিফ ভূঁইয়া (৬৭) এবং রাইয়ান (১১)। আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

নিহতদের মধ্যে তিনজন ঘটনাস্থলে মারা যান। বাকি দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। দুজনই নারী। মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ মোট ৯ জন ছিলেন বলে জানা গেছে।

গেরদা থেকে একটি সড়ক রেলপথ অতিক্রম করে মুন্সিবাজার এলাকায় মিলেছে। ওই সড়কে একটি রেলক্রসিং আছে। কিন্তু এটি অনুমোদিত কোনো রেলক্রসিং নয় বলে রেল বিভাগের কোনো তত্ত্বাবধানও নেই।

এলাকাবাসী জানায়, মধুমতী এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন খুলনা থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। আর মাইক্রোবাসটি গেরদা থেকে মুন্সিবাজারের দিক আসছিল। এ সময় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ‘দুপুর ১২টা ২৮ মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজ শুরু করে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি খাদে পড়ে গিয়েছিল। সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার ভেতরে বা নিচে চাপা পড়া অবস্থায় কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে এসে তারা জানতে পারেন, আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘দুই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালকও রয়েছেন।’ ফরিদপুর রেলের স্টেশনের স্টেশন মাস্টার তাকদির হোসেন বলেন, ‘গেরদায় রেল বিভাগের অনুমোদিত কোনো রেল ক্রসিং নেই। তবে দুর্ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন।’

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমরা জানতে পেরেছি নিহতদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক নিহতের মরদেহ বাড়িতে নেওয়া এবং দাফন কাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা করব।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই রেল ক্রসিংয়ে কোনো লাইনম্যান না থাকায় মাঝেমধ্যে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি ইতোপূর্বে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। দ্রুত এই রেল ক্রসিংয়ের জন্য লাইনম্যান দাবি করেন তারা।

শেয়ার করুন