কানাডায় আসতে পারে অভিবাসীবিরোধী সরকার

মত ও পথ ডেস্ক

ফাইল ছবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সোমবার দলীয় প্রধানের পদ ও প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, দলটি নতুন নেতা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত দেশটির পার্লামেন্টের সব কার্যক্রমও স্থগিত করেছেন ট্রুডো।

বিবিসি জানিয়েছে, লিবারেল পার্টির নতুন নেতা যিনি হবেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু এই নতুন প্রধানমন্ত্রী খুব বেশি দিন থাকতে পারবেন না। কারণ, পার্লামেন্টের কার্যক্রম শুরুর পরই লিবারেল পার্টির বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট উত্থাপন করা হবে। এতে হেরে যেতে পারে দলটি। ফলে কানাডায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা আসতে পারে। যদিও এমনিতে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। কিন্তু অনাস্থা ভোটে লিবারেল সরকারের পতন হলে আগেই নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি ইতোমধ্যে একাধিকবার অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ট্রুডো সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। দেশটির পার্লামেন্টে আসন ৩৩৮টি। আস্থা ভোটে টিকে থাকার যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, সেটি থেকে ১৭টি আসন কম আছে লিবারেলদের। এতদিন ট্রুডো ও লিবারেলদের বাঁচিয়ে দিয়েছে নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)। তারা প্রয়োজনীয় সমর্থন দিয়েছে দলটিকে।

তবে ট্রুডো সোমবার পদত্যাগের পর এনডিপির নেতা জগমত সিং বলেছেন, তারা দলটিকে নতুন করে ‘আর একবারও সুযোগ’ দেবেন না। অর্থাৎ, কানাডায় আগাম নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর আগাম নির্বাচন হলে ক্ষমতায় আসতে পারে কনজারভেটিভ পার্টি। দলটির প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হবেন পিয়ার পলিয়ার। তিনি অভিবাসীবিরোধী হিসেবে পরিচিত।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পিয়ার অভিবাসীদের নিয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘উগ্রপন্থি, অনিয়ন্ত্রিত এনডিপি-লিবারেল সরকার আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারটি ছোট রাখতে হবে।’ ট্রুডো ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি অভিবাসী কানাডায় এনেছেন দাবি করে পিয়ার বলেছিলেন,  ট্রুডো ক্ষমতা নেওয়ার আগে অভিবাসন কোনো বিতর্কিত বিষয় ছিল না। বিদেশি শিক্ষার্থী ও কম বেতনের অস্থায়ী শ্রমিক এনে আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এ জন্য অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে হবে।

এই নেতা জানান, সমপরিমাণ ও পর্যাপ্ত বাড়ি, স্বাস্থ্যসেবা এবং চাকরি থাকা সাপেক্ষে নতুন অভিবাসীদের কানাডায় আসার সুযোগ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে মূলত দেশটিতে অভিবাসীদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।

এদিকে ট্রুডো পদত্যাগ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রকে এক দেশ করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত হয়, তাহলে তাদের কর কমে আসবে। শুল্ক দিতে হবে না। এর আগেও কানাডাকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

২০১৫ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন জাস্টিন ট্রুডো। এর পর যথাক্রমে ২০১৯ ও  ২০২১ সালের নির্বাচনে জয় পান তিনি। তবে এই জয়ের পর থেকে তাঁর জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। সর্বশেষ দলের মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এতে করে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিতে হয় তাঁকে। খবর বিবিসির।

শেয়ার করুন