ফরিদপুরে ২৫ টাকা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাবেক কাউন্সিলর, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে বোয়ালমারী পৌরসভার গুণবহা তালতলা বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার তালতলা বাজারে হোটেল ব্যবসায়ী বিল্লাল মল্লিকের সাথে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা ফরিদ হোসেনের ছেলে মো. রাহুল মোল্যার (২৩) শিঙাড়া খাওয়া নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জেরে বিল্লাল মল্লিকের হোটেলে ভাঙচুর চালায় রাহুল ও তার সহযোগীরা। বিষয়টি জানতে পেরে কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ হোটেল মালিক বিল্লালকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই হাজার টাকা দেয়। বিল্লাল সে টাকা না নিয়ে শনিবার সালিস বৈঠকে মীমাংসায় বসার কথা বলে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে গুণবহা গ্রামের বাসিন্দা ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসির মল্লিকসহ তার লোকজন সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেনের সমর্থকদের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে দুপুরের দিকে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পেশাদারি পালনকালে গণমাধ্যমকর্মী সিরাজুল ইসলামসহ উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

আহতরা হলো সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন, তার সমর্থক টুলু শেখ, ভাই মোহাম্মাদ জাহিদ, আকিম বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মল্লিক, তার সমর্থক মোহাম্মদ আলী, ওমর মল্লিক, জাকারিয়া মাহমুদ, সিরাজুল হক, মারুফ মল্লিক, মিলন মল্লিক ও আহাদ মল্লিক।

আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মল্লিক বলেন, আমার ভাই বিল্লালের সাথে লেনদেন ছিল ফরিদ কাউন্সিলের ছেলে রাহুলের। বিল্লাল রাহুলের পাওনা টাকা পরিশোধ করলেও রাহুল সিঙারা খেয়ে বিল না দিলে কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার সকালে আমার দলের লোকজনের ওপর হামলা চালায় তারা।

সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা ফরিদ হোসেন বলেন, আমার ছেলে বিল্লালের নিকট ৫ হাজার টাকা পায়। রাহুল বিল্লালের দোকান থেকে ২৫ টাকার শিঙাড়া খেয়েছিল, সেই টাকা না দেওয়ায় দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসির মল্লিক তার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার ১০ জন সমর্থক আহত হয়েছি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের ঘটনায় ওমর মল্লিক ও রাজা শেখ নামের দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মো. গোলাম রসুল বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন