রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্নীতি ও যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিতর্কের জেরে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে বরখাস্ত করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী কেমি ব্যাডেনক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, কনজারভেটিভ পার্টির এই নেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া পোস্টে টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানান। লেখেন, ‘কিয়ার স্টারমারের উচিত এখনই টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করা। প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, অথচ তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ।’
কেমি ব্যাডেনক আরও বলেছেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমান সরকারের জন্য একটি বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার শাসনের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পর্ক নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের এমন কিছু বাড়িতে বসবাস করেছেন, যেগুলোর সঙ্গে তার খালা তথা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িত। গত ৫ আগস্ট যিনি ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যান।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মানদণ্ড উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমি কোনো ভুল করিনি। তবে সব বিভ্রান্তি দূর করতে চাই, যাতে আপনি বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারেন।’
টিউলিপ সিদ্দিক তার চিঠিতে আরও বলেছেন, ‘সম্প্রতি আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে অনেক ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে আমি কোনো ভুল করিনি।
অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার টিউলিপের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তিনি (টিউলিপ) যথাযথভাবে কাজ করেছেন এবং নিজেকে স্বেচ্ছায় তদন্তের জন্য হস্তান্তর করেছেন।’
এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক যেসব সম্পত্তি ব্যবহার করেছেন তা তদন্ত করা উচিত এবং যদি সেগুলো লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে, তবে সেগুলো বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত দেওয়া উচিত।’
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে ট্রেজারির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অর্থনৈতিক অপরাধ, অর্থপাচার এবং অবৈধ অর্থের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দায়িত্বে আছেন।