বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কতটা প্রয়োজনীয়, তা পর্যালোচনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে অনেক প্রকল্প বাদ পড়েছে। আবার কিছু প্রকল্পের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। অর্থাৎ আরও প্রকল্প বাদ পড়তে পারে। বরাদ্দ কমতে পারে। অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে সরকার পরিবর্তন এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতির ধাক্কা লেগেছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও। চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের হার গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
এমন বাস্তবতায় এডিপির আকার ছোট করে আনা হচ্ছে। মূল এডিপি থেকে ৪৯ হাজার কোটি টাকা ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। এতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা আরএডিপির আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর মূল এডিপির আকার ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ধরা হয় ১ লাখ কোটি টাকা। জিওবি বা সরকারি তহবিল থেকে রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন। শিগগির আরএডিপি-সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। এর পর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) তা অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এডিপিতে সরকারের নিজস্ব জোগান এবং বিদেশি ঋণ– দুই উৎসের অর্থই কমানো হচ্ছে। নিজস্ব জোগান থেকে পরিমাণে বেশি কমানো হচ্ছে। প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা কমনো হচ্ছে এ অংশের অর্থ বরাদ্দ। এতে আরএডিপিতে সরকারের নিজস্ব জোগানের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে আরএডিপিতে বিদেশি ঋণের উৎস থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। এতে বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮১ হাজার কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয়গুলোর কাছ থেকে পাওয়া সংশোধিত চাহিদার ভিত্তিতে আরএডিপির খসড়া তৈরি করেছেন তারা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে সময় পাওয়ার পর এনইসি বৈঠকের তারিখ ঠিক করা হবে। তিনি জানান, চলতি অর্থবছর মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলো থেকে চাহিদা কম পাওয়া গেছে। এর বড় কারণ হিসেবে প্রকল্প পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
গত অর্থবছর মূল এডিপি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আরএডিপি চূড়ান্ত হয়। মূল এডিপিতে কাটছাঁট হয় ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এতে আরএডিপির আকার ২ লাখ ৭৫ কোটিতে নেমে আসে। ওই বছর মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।