বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের প্রচেষ্টার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খেতাবপ্রাপ্ত ৩৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা বলেছেন, সময়ের প্রয়োজনে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দেশের সংবিধান সংশোধন কিংবা যুগোপযোগী করা রাষ্ট্রের চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলো কোনোমতেই প্রশ্নবিদ্ধ ও পরিবর্তন যাবে না।
১৩ জানুয়ারি (সোমবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশনের ৩৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মারধর, লাঞ্ছিত করাসহ তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে অভিযোগ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করার অর্থ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বেইমানি করা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অর্ধশত বছরের বেশি সময়ের মধ্যে বিগত সরকারগুলো তাদের স্বার্থ হাসিলে নিজেদের মতো করে বাহাত্তরের মূল সংবিধান বারবার কাটাছেঁড়া করে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার পরিপন্থী কাজ করেছে।
বিবৃতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাহাত্তরের সংবিধান ছুড়ে ফেলা কিংবা কবর রচনা করা নিয়ে কোনো বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, কোনোমতেই বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করা যাবে না, বরং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি, বাহাত্তরের মূল সংবিধান হুবহু পুনঃপ্রবর্তন করা হোক।
বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. শাহজাহান কবির (বীর প্রতীক)। এতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন এ ডব্লিউ চৌধুরী বীর উত্তম ও বীর বিক্রম, ক্যাপ্টেন (অব.) শাহাব উদ্দিন (বীর উত্তম), মেজর (অব.) এ টি এম হামিদুল হোসেন (বীর বিক্রম), লে. কর্নেল (অব.) আব্দুর রউফ (বীর বিক্রম), অনারারি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হক বীর বিক্রম, আবুল কালাম আজাদ (বীর বিক্রম), মেজর জেনারেল (অব.) মো. মাসুদুর রহমান বীর প্রতীক, ক্যাপ্টেন কাজী আ. সাত্তার বীর প্রতীক, ডিআইজি (অব.) কাজী জয়নাল আবেদীন বীর প্রতীক, মো. মমিন উল্লাহ্ পাটোয়ারী বীর প্রতীক ও আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীর প্রতীক।
স্বাক্ষরকারী অন্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান খান, মোজাম্মেল হক মাহবুব এলাহী রঞ্জু, নুর উদ্দিন, মহিউদ্দিন মানিক, বাহার উদ্দিন রেজা, অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেলোয়ার হোসেন, রতন আলী শরীফ, সৈয়দ রেজওয়ান আলী, রফিকুল ইসলাম, গোলাম আজাদ, মো. ইদ্রিস আলী, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান, সরদার মহসীন আলী, আ. হাকিম, বজলুর মাহমুদ, নুরুল হক, নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, ফজলুল হক, আবদুল্লাহ ও আব্দুল গফুর।