ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেটের সাম্প্রতিকতম পরীক্ষা এটি উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পরই ব্যর্থ হয়েছে।
স্পেসএক্সের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এ রকেটের পরীক্ষা চালানো হয়। তবে উৎক্ষেপণের স্বল্পসময়ের মধ্যেই এতে ত্রুটি দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জেফ বেজোসের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিনের তৈরি নিউ গ্লেন নামের রকেটের প্রথম সফল উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টা পর মাস্কের প্রতিষ্ঠানের স্টারশিপ রকেটের ওই পরীক্ষা চালানো হয়। গতকাল ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে ব্লু অরিজিনের রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
মহাকাশযানের বাজারে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন মাস্ক ও বেজোস—দুই ধনকুবেরই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা টুইটে স্পেসএক্স জানায়, উৎক্ষেপণের পর দ্রুতই অনির্ধারিতভাবে স্টারশিপ রকেটটি ভেঙে পড়ে। উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হওয়ার মূল কারণ আরও ভালোভাবে বুঝতে সংশ্লিষ্ট দলগুলো ফ্লাইট পরীক্ষার তথ্য পর্যালোচনা করবে।
স্পেসএক্স বলেছে, ‘আমরা এ ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যা শিখি, তা থেকেই সাফল্য আসে এবং আজকের উৎক্ষেপণ স্টারশিপের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে আমাদের সহায়তা করবে।’
এ উৎক্ষেপণ নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, মাঝ আকাশে একটি রকেট বিস্ফোরিত হয়ে ভেঙে পড়ছে। তবে এ ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
ওই ঘটনা নিয়ে ইলন মাস্ক এক্সে লেখেন, ‘সাফল্য অনিশ্চিত, তবে বিনোদন নিশ্চিত।’ এ বার্তার সঙ্গে রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্যও শেয়ার করেন তিনি।
মাস্ক আরও লেখেন, রকেটের উন্নত সংস্করণ এরই মধ্যে উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় রয়েছে।
স্পেসএক্সের সরাসরি সম্প্রচারের তথ্য বলছে, স্টারশিপ রকেটের উৎক্ষেপণে ৭২ লাখের মতো ভিউ হয়েছে।
টেক্সাসের বোকা চিকা এলাকা থেকে গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৮ মিনিটে এ রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি ছিল স্পেসএক্সের রকেটের সপ্তম পরীক্ষা।
উৎক্ষেপণের প্রায় চার মিনিট পর রকেটটির ওপরের অংশ এটির ‘সুপার হেভি’ বুস্টার থেকে পরিকল্পনামতো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এর পরপরই ওপরের অংশটিতে বিস্ফোরণ ঘটে এবং মিশন টিমের কাছ থেকে রকেটটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বলে জানান স্পেসএক্সের যোগাযোগ ব্যবস্থাপক ড্যান হিউঅট।
তবে উৎক্ষেপণের প্রায় সাত মিনিট পর সুপার হেভি বুস্টার (রকেটের নিচের অংশ) পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎক্ষেপণস্থলে ফিরতে সক্ষম হয়।
এদিকে মার্কিন কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন প্রশাসন (এফএএ) বলেছে, স্পেসএক্স মিশনের রকেট উৎক্ষেপণে বিপত্তি দেখা দেওয়ার ঘটনাটি অবগত ছিল তারা। পরে যেখানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ পড়ছিল, সে এলাকা থেকে উড়োজাহাজগুলোকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।