যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে লেবাননের দক্ষিণে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এক লেবানিজ সেনাসহ কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তাছাড়া এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮৩ জন। লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, যেদিন ইসরায়েলি সেনা সদস্যেদর প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ছিল, সেদিনই এমন হামলার ঘটনা ঘটলো। লেবাননের মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত গ্রামগুলোতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করা নাগরিকদের ওপর হামলা চালালে এসব হতা-হতের ঘটনা ঘটে।
আল জাজিরা লিখেছে, ইসরায়েলের এই হত্যাকাণ্ড গত বছরের নভেম্বরে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ওই চুক্তির এর অধীনে রোববার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ২টায় লেবানন থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা ছিল।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, লেবাননের সেনাবাহিনীকে দক্ষিণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের পাশাপাশি মোতায়েন করার কথা ছিল। আর ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এলাকা থেকে সরে যাবে।
গত নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির চুক্তির ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটে।
তবে এক যৌথ বিবৃতিতে লেবাননে জাতিসংঘের দূত ও লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান বলেছেন, দক্ষিণ লেবাননে নাগরিকদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।
এদিকে, রোববার (২৬ জানুয়ারি) ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র আভিচায় আদরাই দক্ষিণ লেবাননের ৬০টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্দেশে একটি বার্তা দেন। তাতে লেবানিজদের ফিরে না আসার জন্য বলা হয়েছিল।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেনা প্রত্যাহার বিলম্ব হওয়ার জন্য লেবাননকেই দায়ী করে বলেছেন, হিজবুল্লাহ সীমান্ত অঞ্চল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরে আসেনি। তবে লেবানন এই দাবি অস্বীকার করেছে ও ইসরায়েলকে সময়সীমা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
দক্ষিণ লেবাননের বোর্জ আল-মলুক থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা জেইনা খোদর বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, তাদের আরও বেশি সময় ধরে সেখানে অবস্থান করা উচিত। কারণ লেবাননের সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণ ও সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা নিশ্চিত করতে কাজ করছে না।
তিনি আরও বলেন, এখানকার মানুষ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত। তারা বিশ্বাস করে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে ইসরায়েলি সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত ছিল। ৬০ দিনের সময়সীমা পার হয়ে গেছে।
সূত্র: আল জাজিরা