বেলারুশের ভোটে পুতিনমিত্র লুকাশেঙ্কোর জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বেলারুশের নেতা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র অ্যালেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো টানা সপ্তম মেয়াদে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ৩১ বছরের শাসন আরও সম্প্রসারণ করলেন।

সোমবার বেলারুশের নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটে লুকাশেঙ্কোর জয় ঘোষণা করেছেন। তবে পশ্চিমারা এই ফল প্রত্যাখ্যান করে একে প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়েছে।

নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে দেখা গেছে, অন্য চার প্রার্থীকে পিছনে ফেলে লুকাশেঙ্কো ৮৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের দাবি, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। কারণ, বেলারুশে স্বাধীন গণমাধ্যম নিষিদ্ধ এবং সব নেতৃস্থানীয় বিরোধী দলীয় নেতাদের হয় জেলে পাঠানো হয়েছে, নয়ত বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, বেলারুশের জনগণের কোনও বিকল্প ছিল না। যারা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রত্যাশী, তাদের কাছে এটি একটি কালো দিন।

ওদিকে নির্বাসিত বিরোধী নেতা সভিয়াতলানা তিখানুস্কায়া বেলারুশের কিছু কোম্পানি এবং ব্যক্তির বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। কারণ, তারা ইউক্রেইনে রাশিয়ার যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যতদিন বেলারুশে লুকাশেঙ্কো ও পুতিনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ততদিন পুরো অঞ্চল শান্তি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকবে।

বিরোধীদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে রোববার লুকাশেঙ্কো বলেন, এই বিরোধীরা নিজেদের ভাগ্য নিজেদেরই বেছে নিয়েছে। তিনি অস্বীকার করেছেন যে, “চরমপন্থি” কার্যকলাপে দোষী সাব্যস্ত ২৫০ এর বেশি জনকে মুক্তি দেওয়ার তার সিদ্ধান্তটি বেলারুশের বিচ্ছিন্নতা শিথিল করতে পশ্চিমাদের জন্য একটি বার্তা ছিল।

চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এক সংবাদ সম্মেলনে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বলেছেন, আমি পশ্চিমাদের নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমরা কখনওই পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করিনি। আমরা সবসময় সম্পর্ক রাখতে প্রস্তুত, কিন্তু আপনারা রাখতে চান না। তাহলে আমরা কী করব, আপনার সামনে মাথা নত করব নাকি হাঁটু গেড়ে বসব?

লুকাশেঙ্কো তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করেছেন। সস্তা তেল এবং ঋণের মাধ্যমে তিনি অনেক লাভ করেছেন। তবে ইউক্রেইন যুদ্ধের ফলে, তিনি এখন আরও বেশি রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। কারণ রাশিয়ার আক্রমণ বেলারুশের ভূখণ্ড থেকেই শুরু হয়েছিল। এছাড়া, বেলারুশে রাশিয়ার কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রও মোতায়েন করেছেন পুতিন।

শেয়ার করুন