বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি: অনশনে তিতুমীরের ৩ শিক্ষার্থী অসুস্থ, চলছে সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। শুরুতে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় কলেজের ফটকের সামনে পাঁচ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই শিক্ষার্থী। পরে অন্যরাও তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

এদিকে শুরুতে অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা প্রায় ২৩ ঘণ্টা অনশনের পর বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা হলেন- কলেজের বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রানা আহমেদ, একই শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের আমিনুল ইসলাম ও মার্কেটিং বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।

এদিকে, অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে সকাল থেকে তিতুমীর কলেজ গেটে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে তারা কলেজের প্রধান ফটকের সামনের গুলশান-মহাখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে দুপুর থেকে এ সড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। সাত কলেজের সঙ্গে তারা কোনো যৌথ বিশ্ববিদ্যালয় চান না। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় নামে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় চান তারা।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা অনশনে বসলেও কলেজে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন চলমান রাখায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে তারা যখন আমরণ অনশনে, তখন কলেজের অধ্যক্ষ জোরে মাইক বাজিয়ে পিলো পাসিং গেম (বালিশ বদল) খেলেছেন। তারা অধ্যক্ষকে অথর্ব দাবি করে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অনশনরত একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যখন আমরণ অনশনে বসেছি, তখন আমাদের খোঁজ না নিয়ে পাশেই কলেজ মাঠে অধ্যক্ষ পিলো পাসিং খেলেছেন। যখন শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করেছেন, তখন তারা এসে আমাদের কলেজে ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে তারা সহযোগিতা না করে উল্টো আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন। এমন অধ্যক্ষ আমরা চাই না।

জানা যায়, বুধবার বিকেল ৫টা থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। এসময় শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবি জানান।

তিতুমীর ঐক্যের দাবিগুলো হলো—তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় চালু করতে হবে।

এছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসনসংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।

শেয়ার করুন