বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করা অত্যন্ত দুরুহ কাজ। একে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে, জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তাহলে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারে না।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা জেলা বিএনপর বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচির আয়োজক খুলনা জেলা বিএনপি।
প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, বিএনপি ১৬ বছর আন্দোলনের আগুনে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। কোন ধরণের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। চারিদিকে প্রতিবিপ্লব উঁকিঝুঁকি মারছে, তবে সেটা হতে দেওয়া হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিপ্লব ও গণতন্ত্রের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে হবেএ অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল সেই সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করেছে। ডেভিল বলতে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকেই বুঝি। কালবিলম্ব না করে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, সবাই সাধুবাদ জানাবে। জনগণ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই শক্তিকে দৃশ্যমান করতে হবে। একজন (শেখ হাসিনা) ষড়যন্ত্র করে কাপড় নিয়ে দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তারা আগামী দিনে পালানোর পথ পাবেন না। সরকার গঠনের ৬ মাস পরে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা কেন? আমরা তো একটি সভ্য জাতি। এসব বিশৃঙ্খলা দূর করতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তিনি বলেন, আপনারা সংস্কার করুন, তবে যৌক্তিক সময়ের ভিতরে করুন। বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই নির্বাচনটি যত দ্রুত দেয়া হবে তা সবার জন্যই মঙ্গল।
সম্প্রতি খুলনা সফরে পাট ও বাণিজ্য উপদেষ্টার বক্তৃতার উদ্বৃতি উল্লেখ করে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, তিনি বলেছেন (পাট উপদেষ্টা) তারা খালিশপুর তথা খুলনা অঞ্চলের বন্ধকৃত পাটকলগুলো চালু করতে পারবেন না। তারাও ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার মতোই শ্রমিক-জনতার কষ্টে অর্জিত পাটকলগুলো লিজ দিতে চায়। আমরা বিএনপি বলছি, জনগণ যদি আমার দল বিএনপিকে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব দেয়- আমরা খুলনা অঞ্চলের সব বন্ধ পাট কল-কারখানাগুলো চালু করবো।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও খুলনা মহানগর শাখার আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. শফিকুল আলম তুহিন।
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টুর সভাপতিত্বে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এবাদুল হক রুবায়েত, নগর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ সুমন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব নাদিমুজ্জামান জনি, নগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রুবেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক আতাউর রহমান রুনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিরাজুর রহমান মিরাজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান মিস্ত্রী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তি, জেলা শ্রমিকদলের আহবায়ক উজ্জ্বল কুমার সাহা, জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা, জেলা ছাত্রদলের গোলাম মোস্তফা তুহিন ও মহানগর ছাত্রদলের তাজিম বিশ্বাস।