কিশোর গ্যাংয়ের হামলা : স্বামীকে বাঁচাতে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন স্ত্রী

মত ও পথ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন স্ত্রী। ভিডিও থেকে নেওয়া ছবিটি সংগৃহীত

সোমবার রাত তখন ৯টা। রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে মার্কেট থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। হঠাৎই কিশোর গ্যাংয়ের খপ্পড়ে পড়েন তারা। এসময় ওই ব্যক্তিকে রামদা দিয়ে কোপাতে আসে হামলাকারীরা। নিজের জীবন বাজি রেখে স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে সামনে দাঁড়ান তার স্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় সেই ভয়াবহ মুহূর্ত।

জনসম্মুখে দম্পতিকে কোপানোর ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সন্ত্রাসী ওই দম্পতিকে রামদা দিয়ে হামলা করছে। এসময় ওই নারীকে হাত জোড় করে স্বামীর প্রাণভিক্ষা চাইতে দেখা যায়। ওই নারীর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে ভুক্তভোগী ওই দম্পতিকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজধানীতে হেন কোনো অপরাধ নেই যা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা করছে না। চুরি, ছিনতাই, দিনে-দুপুরে হামলার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং দেদারছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের সঙ্গে ঝামেলা বাধিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ও মানিব্যাগ, সোনা-গয়না ছিনিয়ে নেয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কিশোর গ্যাং চক্রটির সদস্যরা উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ভেতরে উচ্চশব্দে মোটরসাইকেলের হর্ন বাজিয়ে দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিল। এসময় তাদের মোটরসাইকেল একটি শিশুকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পাশ দিয়ে যাওয়া আরেকটি মোটরসাইকেলে ভুক্তভোগী দম্পতি এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদের লোকজন ডেকে রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে।

এ সময় ভুক্তভোগী নারীর চিৎকারে জড়ো হন লোকজন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান জানান, মোটরসাইকেলে উচ্চ শব্দ করে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা একটি শিশুকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পাশ দিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেলে যাওয়া দম্পতি প্রতিবাদ করে। এরপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদের লোকবল ডেকে দম্পতির ওপর রামদা দিয়ে হামলা চালায়।

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন মো. মোবারক হোসেন (২৫) ও রবি রায় (২২)। গ্রেফতার মোবারকের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায়। তিনি গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় ভাড়া থাকেন। আর রবি রায়ের বাড়ি টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন হাজীর মাজার এলাকায়।

এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি হাফিজুর রহমান।

শেয়ার করুন