ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাডুর ওপর জোর করে হিন্দি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন।
কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে তাদের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইলে তার ফল ভালো হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্ট্যালিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আরেকটি ভাষা-যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তামিলনাড়ু।
এছাড়া লোকসভা সীমানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী ৫ মার্চ সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, চেন্নাইতে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের সভাপতিত্ব করার পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার “আরেকটি ভাষা-যুদ্ধের বীজ বপন করছে” কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্ট্যালিন বলেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই। আমরা এর জন্য প্রস্তুত।”
রাজ্যটির ক্ষমতাসীন ডিএমকে তিন-ভাষা নীতির বিরোধিতা করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে, তামিলনাড়ু তামিল এবং ইংরেজি ভাষাতেই সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতানীন এনডিএ সরকারকে রাজ্যের ওপর “হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার” অভিযোগ করেছে। যদিও তেমন কিছু অস্বীকার করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সংবাদমাধ্যম বলছে, তামিল ও হিন্দির বাইরে তামিলনাড়ুতে তৃতীয় আরেকটি ভাষা পড়ানোর নীতি গ্রহণ করতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, স্কুলে তিনটি ভাষা শিখুক শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এতে আপত্তি জানিয়েছেন এম কে স্ট্যালিনের নেতৃত্বাধীন তামিলনাডুর ডিএমকে সরকার।
তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, হিন্দির আগ্রাসন চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর বিরোধিতা করে তারা লড়াই করতেও রাজি বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। স্ট্যালিনের দাবি, তামিলনাডুর শিক্ষার্থীরা তামিল ছাড়াও ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করবে। কিন্তু বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ওপর জোর করে হিন্দিকে চাপিয়ে দিতে চাইছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও সেখানে তামিলনাড়ু রাজ্যের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেওয়া হতেই প্রতিবাদ করেছিল তামিলনাডু এবং ডিএমকে। এক্ষেত্রে ১৯৬৫ সালের সেই ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন।
তিনি জানান, সেই সময়ে তারা যেমন হিন্দির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, হিন্দির আগ্রাসন ঠেকাতে প্রয়োজন হলে তারা আরও একবার লড়াই করবেন।
এদিকে গত কয়েকদিনে তামিলনাডুর একাধিক জায়গায় হিন্দি ভাষায় লেখা স্টেশনের নামের অংশের ওপর কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র স্টেশনে নয়, একই ঘটনা দেখা গেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই রাজ্যটির অন্য ক্ষেত্রেও।