রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যে দেশটির বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে হোয়াইট হাউস।।এক মার্কিন কর্মকর্তা ও নিষেধাজ্ঞা-সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স জানায়, মস্কোর ওপর দেওয়া যেসব নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যায়, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস। সামনে রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই তালিকা ধরে আলোচনা করা হবে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের সূত্র অনুযায়ী, মস্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের বৃহত্তর আলোচনা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে।
সূত্র অনুসারে, এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কিছু রুশ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। এসব ব্যক্তির মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ধনকুবেরও আছেন।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তারা প্রায়ই এ ধরনের খসড়া তৈরি করেন। তবে হোয়াইট হাউসের এমন অনুরোধ মস্কোর সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা শিথিলের আগ্রহকে ফুটিয়ে তুলছে।
তবে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে ওয়াশিংটন রাশিয়ার কাছ থেকে কী চাইতে পারে, তা এখনো অস্পষ্ট।
এদিকে, মস্কোর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে ওয়াশিংটন সম্পর্ক স্বাভাবিক চাইলে আগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ মঙ্গলবার এ কথা বলেন। ‘নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আমরা কীভাবে দেখি তো জানেনই। আমাদের কাছে এগুলো (নিষেধাজ্ঞা) অবৈধ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা করতে চাইলে অবশ্যই এসব নিষেধাজ্ঞার বোঝা থেকে আমাদের মুক্ত করতে হবে,’ বলেন পেসকভ।
রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। তাদের জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ইরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেন, তারপরও বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল থাকতে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে মস্কোর ওপর ওয়াশিংটনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো মূলত তাদের বৃহৎ তেল ও গ্যাস শিল্পের আয় সীমিত করার চেষ্টা করেছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আবার তুরস্কের শহর ইস্তাম্বুলে বৈঠক করেন দুই দেশের কূটনীতিকরা। সেখানে রাশিয়ার ওপর দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার প্রস্তাব রাখে মস্কো। এছাড়া দুই দেশের কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয় উভয়পক্ষ।