ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় লাঠিপেটা: নখের আঁচড়ে আহত হওয়ার কথা বলল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের’ পদযাত্রায় পুলিশের লাঠিপেটা ও নারীদের টানাহেঁচড়ার অভিযোগ ওঠার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সেখানে নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এছাড়া বিক্ষোভকারীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠি দিয়ে হামলায় রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনারসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ হয়ে পদযাত্রাটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি করলে পুলিশ কয়েকদফা লাঠিপেটা করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।

একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কা দিলে পুলিশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আর ব্যারিকেডের পাশে ছিল পুলিশ আর জলকামান।

এরমধ্যে পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার এক নারীকে ধরে টানাহেঁচড়া করছেন এরকম ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। ছবিগুলো ফেইসবুকে শেয়ার দিয়ে অনেকে পুলিশের সমালোচনা করেছেন।

জুলাই-অগাস্টের গণ আন্দোলনের সময়কার ছবিগুলো পাশাপাশি দিয়ে অনেকে বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের পরেও পুলিশ ‘ফ্যাসিস্ট আমলের মত’ ব্যবহার করছে।

এমন সমালোচনার মধ্যে সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পদযাত্রায় ঘিরে পুলিশের বাধা দেওয়ার সময় উল্টো পুলিশ সদস্যদের আহত করার অভিযোগ করা হয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আজ মঙ্গলবার বিকাল অনুমান ৩টা ৩৫ মিনিটে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০-৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। এসময় ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের উপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ করে। এসময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সাথে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের উপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তাদের হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শেয়ার করুন