গাজায় ভূমি দখলের হুমকি ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। ছবি : এএফপি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চতুর্থ দিন শুক্রবারও অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তরে ও দক্ষিণে গাজায় ভূমি অভিযান শুরু করেছে এবং দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাজা উপত্যকার ভূমি দখলের হুমকি দিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান আরও তীব্র করা হবে এবং সব ধরনের সামরিক ও বেসামরিক চাপ প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে গাজাবাসীকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বেচ্ছা অভিবাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, কাৎজ সেনাবাহিনীকে গাজায় অতিরিক্ত এলাকা দখল, জনগণকে সরিয়ে নেওয়া এবং ইসরায়েলি সম্প্রদায় ও সেনাদের সুরক্ষার জন্য গাজার চারপাশে নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপ হামাস যতদিন পর্যন্ত গাজায় আটককৃত সব জিম্মিকে মুক্তি না দেবে, ততদিন ইসরায়েল গাজার ভূমি দখল করতে থাকবে।

দ্য জেরুজালেম পোস্ট পত্রিকা কাতজকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, হামাস যদি জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করে, তাহলে তারা আরও বেশি ভূমি হারাবে, যা ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত করা হবে। যদি জিম্মিরা মুক্তি না পায়, ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় আরও বেশি ভূমি স্থায়ী নিয়ন্ত্রণে নেবে।

এই ঘটনার আগে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণতম শহর রাফাহর শাবুরা এলাকা এবং উত্তরের বেইত লাহিয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এই সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েল বলেছে, তারা গাজার প্রধান উত্তর-দক্ষিণ রুট বন্ধ করে দিয়েছে, যা তাদের স্থল অভিযানের সম্প্রসারণের অংশ।

আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি, যিনি গাজার কেন্দ্র থেকে প্রতিবেদন করছেন, বলেছেন যে বেইত লাহিয়া ও রাফাহর বাসিন্দাদের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আগে থেকে কোনও সতর্কবার্তা দেয়নি। তিনি বলেন, তারা লিফলেট ফেলেনি বা মানুষদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য কোনও সতর্কবার্তা দেয়নি। হঠাৎ করেই ফিলিস্তিনিরা দেখলেন অবিরাম বিমান হামলা ও আর্টিলারি শেলিং তাদের আক্রমণ করছে।

এই স্থল অভিযান শুরু হয়েছে ইসরায়েলের গাজায় প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভাঙার পর। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০০ শিশু রয়েছে।

এদিকে, আল জাজিরার প্রতিবেদকরা বলেছেন, শুক্রবার গাজা সিটির জেইতুন এলাকা উত্তরে ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের পূর্বে খুজায়া ও আবাসিক এলাকাতেও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।

শেয়ার করুন