সেনা সদস্যকে ‘অপহরণ-নির্যাতন’, বরিশালে বিএনপির ৩ নেতা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছুটিতে বাড়িতে এসে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এক সেনা সদস্য তার চাচার সঙ্গে বরিশাল সদরে বালু মহালর দরপত্র জমা দিতে গিয়ে অপহরণ ও মারধরের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার ওই সেনা সদস্যের চাচা মামলা করেছেন বলে জানান বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় ওসি মো. মিজানুর রহমান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- বরিশালের হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেন (৪২), বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও যুবদল কর্মী নুর হোসেন সুজন (৩৫) এবং হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. ইমরান খন্দকার (৩৫)।

সেনা সদস্য মো. জাফর মতলব উত্তর উপজেলার মহনপুর গ্রামের মো. শওকতের ছেলে। তিনি রাজশাহী সেনানিবাসে ল্যান্স করপোরাল পদে কর্মরত।

বাদী আব্দুল মতিন কাজী একই গ্রামের কাজী আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি জাফরের চাচা।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু (৩৬), বরিশাল মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাঢ়ী (৫২), রুবেল (৫১), বেলায়েত (৩২), মো. জাহিদ (৪৫), মহানগর মহিলা দলের নেত্রী ফরিদা বেগম (৪৫), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম (৫০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু (৪৮) এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. নিজাম।

মামলার বরাতে ওসি মিজানুর বলেন, সোমবার দুপুর ১টার দিকে মতিন কাজী ও জাফরসহ তিনজন বালু মহালের ইজারা নেওয়ার জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান। তারা দরপত্র জমা দিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গেলে কয়েকজন তাদের ঘিরে ধরেন।

“এ সময় তাদের কাছে টেন্ডার জমা দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের মারধর করা হয়। দুইজন পালিয়ে গেলেও সেনা সদস্য জাফরকে তুলে নিয়ে যান আসামিরা। তাৎক্ষণিক বিষয়টি বরিশাল সেনা ক্যাম্পে জানানো হয়।

“জাফর নিজেকে ল্যান্স করপোরাল পরিচয় দিলেও আসামিরাও নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাকে মারধর করেন। এ ছাড়া তার সঙ্গে থাকা সেনা পরিচয়পত্র ভেঙে ফেলা হয়। পরে তার কাছ থেকে এক ভরি ওজনের সোনার চেইন, একটি আইফোন, ১৫ হাজার টাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইন্সেস ছিনিয়ে নেয়।”

পরে রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নগরের লঞ্চঘাট এলাকার আবাসিক হোটেল রিচমার্টের ৩১০ নম্বর কক্ষ থেকে জাফরকে উদ্ধার ও তিনজনকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি মিজানুর।

বিকালে ওই তিনজনকে বরিশাল জ্যেষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক নুরুল আমিন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আদালতের জিআরও এনামুল হক।

এ ব্যাপারে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর এর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন