রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৬ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের কাছে ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রধান উপদেষ্টা এ পুরস্কার দেন। ছয়জন মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যরা এ পদক নেন। একজন পুরস্কার গ্রহণ করেননি।
এর আগে গত ১১ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর) স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। জামাল নজরুল ইসলামের কন্যা সাদাফ সাদ সিদ্দিকী ও আল মাহমুদের কন্যা আতিয়া মীর পুরস্কার গ্রহণ করেন।
এছাড়া সাংস্কৃতিতে ভাস্কর নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ এবং মুক্তিযুদ্ধ ও সাংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর) পুরস্কার পেয়েছেন। নভেরা আহমেদের পুরস্কার প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। ফজলে হাসান আবেদের ছেলে শামেরান আবেদ, আজম খানের কন্যা অরণী খান পদক গ্রহণ করেন।
শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্য ক্যাটাগরিতে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)। কিন্তু বদরুদ্দীন উমর পুরস্কার গ্রহণ করেননি। সরকার তার ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে পুরস্কারের একটি রেপ্লিকা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সরকার তার পুরস্কারের উপযুক্ততার বিষয়ে নিসংশয় বলে অনুষ্ঠানে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
অন্যদিকে আবরার ফাহাদের মাতা রোকেয়া খাতুন পদক গ্রহণ করেন।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা, আঠারো ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্ত সুধীজনের নাম ঘোষণা ও পরিচিতি পাঠ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা প্রতিক্রিয়া জানান।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশ বরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।