সপ্তমবারের মতো বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুকাশেঙ্কো

মত ও পথ ডেস্ক

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। সংগৃহীত ছবি

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন মেয়াদে শপথ নিয়েছেন আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রুশ-ঘনিষ্ঠ এই নেতা। বুধবার (২৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মঙ্গলবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সপ্তমবারের মতো শপথ গ্রহণ করেছেন আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। শপথ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় সেরিমোনিয়াল হলে, যা দেশটির রাজধানী মিনস্কের প্যালেস অব ইন্ডিপেন্ডেন্সের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্থান।

অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য ১হাজার ১০০ জনেরও বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। লুকাশেঙ্কোর আগমনের ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগে বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা এবং প্রেসিডেন্টের পতাকা হলের ভেতরে আনা হয়।

পরে সংবিধানের ওপর ডান হাত রেখে লুকাশেঙ্কো শপথ গ্রহণ করেন এবং এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান লুকাশেঙ্কোকে আনুষ্ঠানিক সনদ প্রদান করেন।

চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারির নির্বাচনে লুকাশেঙ্কো আবারও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন যেখানে তিনি ৫১ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট ভোটের প্রায় ৮৭ শতাংশ।

এরপর কমিশন গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল অনুমোদন করে।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বেলারুশ। স্বাধীনতার পর দেশটির অস্থায়ী সরকারপ্রধান ছিলেন সাবেক সোভিয়েত বেলারুশ অঙ্গরাজ্যের চেয়ারম্যান স্তানিস্লাভ শুশকেভিচ। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় বেলারুশে এবং তাতে জয়ী লুকাশেঙ্কো। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ বার প্রেসিডেন্ট নির্বচন হয়েছে বেলারুশে, প্রতিবারই জয় পেয়েছেন তিনি।

বেলারুশের সংবিধান অনুসারে দেশটির প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৫ বছরের। সেই হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৩৩ বছরের মধ্যে ৩০ বছরই দেশটির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের পদে রয়েছেন লুকাশেঙ্কো। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে তার রাষ্ট্রের শীর্ষপদে থাকার মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়ল; অর্থাৎ আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত বেলারুশের প্রেসিডেন্ট পদে থাকছেন তিনি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক তেমন ভালো নয়। ২০২০ সালের নির্বাচনে যখন জয় পান, সে সময় তার বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেত্রী এসভেতলানা তিখানোভস্কায়া। ইউরোপপন্থী এই নেত্রীর সে অভিযোগ সমর্থন করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নও। তবে লুকাশেঙ্কো এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

১৯৯৯ সাল থেকে বেলারুশ রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে দু’দেশেল সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ইউরোপজুড়ে মার্কিন বাহিনীর টহল বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গত বছর মস্কো এবং মিনস্ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যার আওতায় বেলারুশের ভূখণ্ডে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করার জন্য মস্কোকে অনুমতি দেয় মিনস্ক।

শেয়ার করুন