শরীয়তপুরের ডামুড্যায় দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে পুলিশ সদস্যসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন—পুলিশ কনস্টেবল কৌশিক আহমেদ সেতু (৩০), কাউসার তালুকদার (২৯), চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য রুবায়েত মীর (২৭) ও কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার শরীফ হোসেন (৩৫)।
পুলিশ সদস্য কৌশিক ও কাউসার বেশ কয়েকদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মুক্তিপণ নিতে গেলে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
আজ শুক্রবার শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দারুল আমান বাজার এলাকা থেকে কাপড় ব্যবসায়ী মো. জুয়েল সরদার (৩২) ও ফয়সাল সরদারকে (২৪) অপহরণ করা হয়।
পুলিশ ও ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফেরার সময় কয়েকজন লোক ওই দুই ব্যবসায়ীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। অপহরণকারীরা দুই ব্যবসায়ীর কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই ব্যবসায়ী তাদের ৪ লাখ টাকা দেন। আরও ৬ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য তারা দুজন ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাওয়ার কথা বলেন। সেখানে যাওয়ার পর ওই দুই ব্যবসায়ী গাড়ি থেকে চিৎকার করলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তখন স্থানীয়রা গাড়িটি আটক করে ও অপহরণকারীদের পিটুনি দেয়। এরপর সেখানে পুলিশ এসে দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ও চার অপহরণকারীকে আটক করে। তবে, গাড়িতে থাকা আরও ৪ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
উদ্ধারের পর ফয়সাল ও জুয়েল বলেন, ‘অপহরণকারীরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাদের হাতে হাতকড়া পরায় ও পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেয়। আমরা ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হওয়ার পরও আমাদের লোহার রড দিয়ে পেটায়, কিল-ঘুষি মারে। পরে আমাদের মাদারীপুর লেক পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে আমরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা দেই।’
এ ঘটনায় আজ দুপুরে ফয়সালের ভাই স্বাধীন সরদার বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় একটি মামলা করেছেন।
পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আটক ৪ জনের মধ্যে ৩ জন পুলিশ সদস্য বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আর পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য আছেন। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।’