শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে। হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, টাফ্টসের মতো প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী ও সদ্য স্নাতকদের ভিসা বাতিলের ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতি থেকে জানা গেছে, ফেডারেল অভিবাসন রেকর্ড হালনাগাদ হওয়ার পরই কেবল এসব ভিসা বাতিলের তথ্য জানতে পারছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, এ ধরনের ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের শেভ দালাল-ধেইনি বলেন, কী ঘটছে, তা বোঝার চেষ্টা করছি আমরা। এর ব্যাপ্তি ও পরিধি বুঝতে তথ্য সংগ্রহ করছি।

টাফ্টস ইউনিভার্সিটির তুরস্কের পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্ক এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সদ্য স্নাতক মাহমুদ খলিলের ভিসা বাতিলের ঘটনা আলোচনায় এসেছে। ওজতুর্ককে গত মাসে রাস্তা থেকে আটক করা হয়। অন্যদিকে, ফিলিস্তিন সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় খলিলের ভিসা বাতিল হয়। বর্তমানে দুজনকেই অভিবাসন কারাগারে আটক রেখে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ার একাধিক ক্যাম্পাসের কয়েক ডজন শিক্ষার্থী ও সদ্য স্নাতকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ইউসিএলএ, ইউসি বার্কলে, ইউসি ডেভিস, ইউসি সান দিয়েগো, ইউসি সান্তা ক্রুজ ও স্ট্যানফোর্ডের শিক্ষার্থীরা এতে আক্রান্ত হয়েছেন। ভিসা বাতিলের প্রতিবাদে দুজন শিক্ষার্থী ফেডারেল আদালতে মামলা করেছেন। তাদের দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, ছয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের কথা জানা গেছে। হার্ভার্ডের তিন বর্তমান ও দুই সদ্য স্নাতকের ভিসা বাতিল হয়েছে বলে রোববার নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডার্টমাউথ কলেজ, মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব অরেগনসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানেও ভিসা বাতিলের ঘটনা ঘটেছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দালাল-ধেইনি বলেন, স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভিসা বাতিলের ক্ষমতা আগে থেকেই আছে। কিন্তু এবারের পদক্ষেপ আগের তুলনায় অনেক বেশি সুসংগঠিত ও বিস্তৃত।

গত ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে ভিসা বাতিলের ঘটনাও আলোচনায় আসে। বিক্ষোভকারীরা ওজতুর্ক ও খলিলের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি ও ক্যাম্পাসে বাকস্বাধীনতা হরণের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

শেয়ার করুন