আমি ভুল কিছু করিনি: টিউলিপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

টিউলিপ সিদ্দিক
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: অনলাইন

প্লট দুর্নীতির মামলায় বাংলাদেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেছেন, তিনি ভুল কিছু করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ কোথাও নেই।

স্কাই নিউজ জানিয়েছে, সোমবার লন্ডনে নিজের বাড়ির বাইরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত শাসক শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ। তিনি বলেন, ‘তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের শিকার।’

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের মামলায় ঢাকার একটি আদালত রোববার টিউলিপসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

সেই তালিকায় শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামও রয়েছে।

টিউলিপের আইনজীবী পল থুয়েট সেদিন রাতে এক বিবৃতিতে দাবি করেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে দুদকের আনা অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’।

সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ বলেন, বাংলাদেশের কোনো কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তাকে ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ শিকার হতে হচ্ছে।

লেবার এমপি টিউলিপ বলেন, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার নিয়ে মন্তব্য করে আমি এগুলোকে গুরুত্ব দিতে চাই না। তারা আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমি ভুল কিছু করেছি, এমন কোনো প্রমাণ নেই।

শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক।

এর ছয় মাস আগে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতন ঘটে। এর পরপর বাংলাদেশের প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নির দুর্নীতি জড়ানোর অভিযোগের মধ্যে ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে টিউলিপ কোনো নিয়ম ভেঙেছেন– এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস বলেছিলেন, টিউলিপ যদি তার পরিবারের বাংলাদেশি রাজনৈতিক যোগাযোগ থেকে উদ্ভূত সম্ভাব্য ‘সম্পদের ঝুঁকি’ সম্পর্কে আরও সচেতন হতেন, সেটা তার জন্য ভালো হত।

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার অবশ্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর টিউলিপের প্রশংসাই করেছিলেন; বলেছিলেন, টিউলিপের জন্য তার দরজা খোলা থাকবে।

স্কাই নিউজ লিখেছে, বাংলাদেশে পরোয়ানা জারি এবং অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষাপটে টিউলিপের ফেরার সুযোগ এখনো আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কাছে।

জবাবে একজন মুখপাত্র বলেছেন: আমরা নির্দিষ্ট কোনো মামলার বিষয়ে মন্তব্য করি না।

অন্যদিকে পার্লামেন্টের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির একজন মুখপাত্র বলেছেন, যদি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে থাকে, তার অবিলম্বে এমপি পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।

এদিকে প্লট দুর্নীতির মামলায় পরোয়ানা জারি নিয়ে আলোচনার মধ্যে আজ মঙ্গলবার টিউলিপের বিরুদ্ধে নতুন আরেকটি মামলা করেছে দুদক।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকার গুলশানের একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’ করিয়ে দিয়ে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে।

শেয়ার করুন