প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সদস্যকে দায়ী করেছে ছাত্রদল। এ ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই সঙ্গে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে প্লাটফর্মটি।
আজ রোববার ভোরে প্লাটফর্মটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এই সংক্রান্ত পোস্ট করা হয়।
পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলকর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীকে দায়ী করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ অন্যান্যরা। একজন মৃতব্যক্তির লাশের উপর দাঁড়িয়ে ছাত্রদলের এমন ঘৃণ্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সোবহান নিয়াজ তুষার এবং হৃদয় মিয়াজী, পারভেজ হত্যার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।
এতে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সবচেয়ে বড় সংগঠন PUSAB তাদের ফেসবুকে যে তিনজন হত্যাকারীর নাম উল্লেখ করেছে, সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপরোক্ত দুইজন নেতা অন্তর্ভুক্ত নন।
বৈষম্যবিরোধীদের দাবি, কোনো প্রমাণ ছাড়াই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন নেতার নাম জড়িয়ে ফেসবুকে মব ট্রায়াল চালানোতে তাদের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটছে। একই সঙ্গে পারভেজ হত্যার মূল আসামিরা অনালোচিত থেকে যাচ্ছে। পারভেজ ছাত্রদল কর্মী হলেও ছাত্রদলেরই সাধারণ সম্পাদক হত্যাকারীদের কেন আড়াল করতে চাইছেন, সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। হত্যাকারীদের আড়াল করতে চাওয়ার পেছনে তার অন্য কোনো দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য আছে কিনা, সেটি গোয়েন্দা বাহিনীকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। সর্বোপরি, ছাত্রদলকে অনুরোধ জানাবো স্বীয় দলের কর্মীদের লাশ ব্যবহার করে নোংরামি রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে।
এর আগে গতকাল রাতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী শাখার সদস্যরা জড়িত।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার রাতে বনানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, শনিবার বিকালে পাশের ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসির জেরে প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পারভেজের বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে দুইপক্ষের মধ্যে মীমাংসা করা হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ক্যাম্পাস থেকে বের হলে পারভেজকে ৩০ থেকে ৪০ জন ঘিরে ধরে। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হন পারভেজ। পরে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।