দেশে নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান হচ্ছে, নব্য ফ্যাসিবাদের দোসররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
আজ রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পুলিশ কিছুটা বিএনপি, কিছুটা জামায়াতের কথা শুনে হা-হুতাশ করছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন দিলে সবাই পিটিয়ে-পাটিয়ে নির্বাচন করবে। এমন নির্বাচন বৈধতা পাবে না। সকল সমস্যা সামধানের জন্য একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। সরকারকে বৈধ করতেই সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে।
অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করা দলটির চেয়ারম্যান মন্তব্য করেন, সরকার একটা দল গঠন করেছে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে সংস্কার চালাচ্ছে। যেনতেনভাবে তাদের নির্বাচনে পাশ করাবেন, তা কি হাসিনার নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সবকিছু হাতে নিয়েই থাকতে পারল না— আপনারা কত দিন থাকতে পারবেন? যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দিবেন— তারা ঘরে বসে আঙ্গুল চুষবে? দেশে স্থিতিশীলতা আসবে কেমন করে? ভালো নির্বাচন দিতে হবে, সবাইকে সাথে নিয়েই চলতে হবে। দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জাতিকে চলতে হবে। সবাই মিলে আধাপেট খেয়ে হলেও দেশকে গড়তে হবে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছিলাম, বর্তমান সরকার জাতিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে। যেন দেশের অর্ধেক লোক বাদ দিয়ে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারে। ফ্যাসিবাদ থেকে যারা শিক্ষা নিয়ে নব্য ফ্যাসিবাদ হয়েছেন, আপনাদেরও পতন হবে। ফ্যাসিবাদের দোসররা মারতে আসবে, পুলিশ তাদের সহায়তা করবে। তারপরও প্রতিবাদ করতেই হবে। নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লাখ লাখ লোক প্রতিবাদ করবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি নিয়ে আবারো ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যারা শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল, তাদেরকে লাঙ্গল প্রতীক দেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ষড়যন্ত্রকারীদের আবেদন সাদরে গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশনের যে ভদ্রলোক ষড়যন্ত্রকারীদের আবেদন গ্রহণ করেছেন, তিনি নির্বাচনে আমার বিপক্ষে কারচুপি করতে চেয়ে ধরা পড়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। এখন সেই লোকটি আমার বিরুদ্ধ লেগেছেন। আমরা যেন কাউন্সিল করতে না পারি— সেজন্য আমাদের কোন হল ভাড়া দেয়া হচ্ছে না। কাউন্সিল করতে না পারলেই আমাদের বাতিল করতে পারবে। এই পলিসিতে ষড়যন্ত্র করছে তারা।
এদিকে একই সময়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর সেগুনবাগিচার জেকে টাওয়ারে। সেখানে বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ।
এতে কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিক, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন জেলার নেতারা বক্তব্য দেন।
বর্ধিত সভায় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে দলীয় চেয়ারম্যান পদ দখল করেন জি এম কাদের। দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে এই পদে কখনোই দেখতে চাননি। আজ জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তার করা শুধু জনগণ নয়, দলীয় নেতাকর্মীদেরও প্রধান দাবিতে পরিণত হয়েছে।