ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গুলশান সোসাইটির সিদ্ধান্তে গুলশানে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ায় গত দুদিন ধরে চালকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে নিষেধাজ্ঞার তৃতীয় দিন এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিন তারা বনানীর ১১ নম্বর সড়কে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় সেখানে অবস্থান করা প্যাডেল চালিত রিকশা ও বাইক চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় এবং লাঠি দিয়ে পেটানোর ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালকরা সড়ক ছেড়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকে গুলশান ও বনানী এলাকায় বিক্ষুব্ধ অটোচালকরা যেখানে প্যাডেল চালিত রিকশারচালকদের দেখছেন সেখানে তাদের ওপর চড়াও হয়েছেন। এসময় আশপাশে থাকা বাইকাররা বাধা দিলে তাদের ওপর চড়াও হন তারা। এছাড়া তারা দুটি রিকশা গুলশান লেকে ফেলে দেন। একটি রিকশা ফেলে দেওয়া হয়েছে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজ থেকে। আরেকটি রিকশা ফেলে দেওয়া হয়েছে ব্রিজের পাশ থেকে। এসব ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অটোরিকশা চালকরা বনানীর বিভিন্ন সড়কে ও আশপাশের প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করেন। এসব ঘটনায় স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীদের মাঝেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তারাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।
এবিষয়ে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. জিয়াউর রহমান জানান, বাইরের রিকশা প্রবেশ ঠেকাতে ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকায় পুলিশের ক্রাইম বিভাগের একটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল। ব্যাটারিচালিত রিকশা আটকানোর সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ব্যাটারি চালিত ও প্যাডেল চালিত দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় তারা অনেক পথচারী ও মোটরসাইকেল চালককে আঘাত করেছে।
বনানী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) এ কে এম মইনুদ্দিন বলেন, গুলশান সোসাইটি এলাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশা ঢুকতে না দেওয়ায় সকাল থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকরা বিচ্ছিন্নভাবে জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে আগ্রাসী মনোভাব দেখা যায়। তারা প্যাডেল চালিত রিকশা দেখলে হামলা করার চেষ্টা করছিল।
তিনি আরও বলেন, পরে বেলা ১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল থেকে গুলশানে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়। এর আগে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট রঙের ও নিবন্ধিত প্যাডেল চালিত রিকশা চলতে পারতো গুলশানে। তবে গত কয়েক মাস ধরে বাইরের ব্যাটারি চালিত রিকশা এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করলে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়ে বলে স্থানীয়রা জানান।
এই প্রেক্ষাপটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), গুলশান সোসাইটি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।