ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মূল্যস্ফীতি কমবে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। এমন আশাতেই ভূমিধস জয় পেয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাঁর জনপ্রিয়তা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। ভোটারদের আশা ভঙ্গ হওয়ায় হোয়াইট হাউসের মসনদে বসার প্রথম ১০০ দিন ঘনিয়ে আসতেই ট্রাম্পের সমর্থনে ভাটা পড়েছে।
বুধবার প্রকাশিত রয়টার্স ও ইপসোসের এক জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন অর্থনীতি সামলানোর ক্ষেত্রে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট কেবল ৩৭ শতাংশ মানুষ।
অথচ ক্ষমতায় আসার কয়েক ঘণ্টা পর, কেবল মার্কিন অর্থনীতির সোনালি যুগ ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেই ৪২ শতাংশ মানুষের সমর্থন আদায় করেছিলেন ট্রাম্প। অর্থনীতি এবং অভিবাসন নীতিতে ধাক্কা দেওয়ায় ট্রাম্পের সমালোচনা করছেন আমেরিকানরা। জরিপের ফলাফল বলছে, জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করেই ট্রাম্প যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা অনেক আমেরিকানের কাছেই তাঁকে অজনপ্রিয় করে তুলছে।
মার্কিন চিন্তক সংস্থা, আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের একজন জ্যেষ্ঠ ফেলো জেমস পেথোকুকিস বলেছেন, আমরা একজন প্রেসিডেন্টকে পেয়েছি, যিনি সোনালি সময়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অথচ যা থাকার কথা ছিল ওপরে, তা এখন নিম্নগামী। আর যে সূচক থাকা দরকার নিচে, তা এখন ঊর্ধ্বগামী।
দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই আগ্রাসী অর্থনৈতিক এজেন্ডা গ্রহণ করেন ট্রাম্প। নতুন নীতির আওতায় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক অংশীদারদের ওপর শুল্কের বোঝা চাপিয়ে এবং সম্প্রতি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর নিজের ক্ষমতা প্রয়োগের চেষ্টা করে দেশের শেয়ারবাজারে একটা লেজেগোবরে পরিস্থিতি তৈরি করেন তিনি। শেয়ারবাজারে সূচক এতটা নিম্নগামী শেষ দেখা গিয়েছিল পাঁচ বছর আগে, কভিড মহামারির সময়। অবশ্য, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় শুল্কনীতিতে ট্রাম্প কিছুটা পিছু হটলেও, অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে মনে করেন পেথোকুকিস।
ট্রাম্পের অভিষেকের পরই আয়োজিত এক জরিপে প্রায় ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছিলেন, ট্রাম্পের প্রথম ১০০ দিনের প্রধান অগ্রাধিকার উচিত মুদ্রাস্ফীতি বা সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতি। আর ট্রাম্পের নিজের পছন্দের অভিবাসন ইস্যুর সপক্ষে মত দিয়েছিলেন মাত্র ২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
সাম্প্রতিক জরিপে তিন-চতুর্থাংশ অংশগ্রহণকারী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি মন্দার দিকে যাচ্ছে। আর ৫৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত এলোমেলো।
অংশগ্রহণকারীদের কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের ভবিষ্যৎ কী। এটা যাচাইয়ের জন্য বক্তব্য রাখা হয়, ‘ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের কারণে অবসর জীবনে আমার ভোগান্তি হবে’– এর সঙ্গে একমত হয়েছেন ৫২ শতাংশ মানুষ এবং দ্বিমত পোষণ করেছেন ৩১ শতাংশ।