গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অঞ্চলটিতে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর ফলে, অঞ্চলটির ৬৫ হাজারের বেশি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছে। গাজা প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগের তথ্যের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে লন্ডন থেকে পরিচালিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে জীবন সংকটে পড়েছে ৬৫ হাজারের বেশি শিশু। টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ত্রাণ ও জরুরি সরবরাহ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তেল আবিবের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গাজার জনসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল গাজায় পরিকল্পিতভাবে দুর্ভিক্ষ তৈরি করছে। দেশটি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে ৩৯ হাজার ট্রাক ভর্তি ত্রাণ, জ্বালানি এবং ওষুধ ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাপক লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজার সব বেকারি গত ৪০ দিন ধরে বন্ধ। এতে বাসিন্দারা রুটি ও অন্যান্য খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রুটি এখানকার প্রধান খাবার। এই কারণে দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টি তীব্র হচ্ছে, বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ ও বৃদ্ধদের মধ্যে। তারা জানিয়েছে, অপুষ্টি ও খাবার সংকটে ৬৫ হাজারের বেশি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েল ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েল টানা ৭০ দিন ধরে ক্রসিংগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে। চলমান গণহত্যার মধ্যে এই পরিস্থিতি মানবিক ও স্বাস্থ্য বিপর্যয়কে আরও খারাপ করে তুলেছে।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত বেড়ে অন্তত ৫২ হাজার ৮১০ জনে দাঁড়িয়েছে। গত অক্টোবর থেকে এই নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১২৪ জন। এতে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৩ জন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বহু হতাহত এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। রাস্তার ওপরও অনেকে রয়েছেন। কিন্তু উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না। গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় তাদের হামলা পুনরায় শুরু করে। এর পর থেকে তারা ২ হাজার ৭০১ জনকে হত্যা করেছে। আহত করেছে ৭ হাজার ৪৩২ জনকে। এর মধ্য দিয়ে জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে গেছে।