রাজধানী ঢাকার শেওড়াপাড়া এলাকায় মরিয়ম বেগম ও সুফিয়া বেগম নামের দুই বোনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জড়িত ঘাতক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতের নাম- গোলাম রব্বানী ওরফে তাজ (১৪)। সে নিহতদের অপর এক বোনের সন্তান।
পুলিশ বলছে, সাইকেল কেনার টাকা সংগ্রহের জন্য খালার বাসায় এসে টাকা চুরি করে গ্রেপ্তারকৃত কিশোর। কিন্তু চুরির বিষয়টি দেখে ফেলা এবং বাবা-মাকে জানানোর কথা বলায় চাকু ও শিলনোড়া (পুতা) দিয়ে হত্যা নির্মমভাবে দুই খালাকে হত্যা করে। এরপর বাসায় তালা মেরে চাবি নিয়ে চলে যায়।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে তাজ প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার কথা বলে যাত্রাবাড়ির শনির আখড়ার বাসা থেকে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু যে বাসা থেকে বের হয়ে সোজা বড় খালা মরিয়ম বেগমের শেওড়াপাড়ার বাসায় যায়। বাসাটিতে প্রবেশের পর তার বড় খালা শরবত বানাতে যায়। আর সেজো খালা (সুফিয়া বেগম) বারান্দায় যায়। এই সুযোগে সে বড় খালার রুমে টিভির পাশে রাখা মানিব্যাগ থেকে সাইকেল কেনার জন্য তিন হাজার টাকা চুরি করে। বিষয়টি তার বড় খালা দেখে ফেললে তাকে বকাবকি করে এবং তাজের মাকে জানানোর জন্য মোবাইল খুঁজতে থাকে। এসময় ডাইনিং টেবিলে থাকা লেবু কাটা ছুরি দিয়ে প্রথমে বড় খালার পেটে আঘাত করে। বড় খালার চিৎকারে সেজো খালা (সুফিয়া) পেছন থেকে এসে তাজকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে তাজ ঐ একই চাকু দিয়ে সেজো খালার পেটে একবার আঘাত করলে তিনি মেঝেতে পড়ে যায়। এরপর তাজ রান্না ঘরের চুলার পাশ থেকে শীল-পাটার নোড়া এনে দুই খালার মাথায় বারবার আঘাত করে। পরবর্তীতে হাত ও মুখে লেগে থাকা রক্ত পরিষ্কার করে এবং নিজের টি-শার্ট ও প্যান্টে রক্ত লেগে থাকায় খালাতো বোনের ব্যবহৃত জিন্স প্যান্ট পরে দরজার বাইরে থেকে তালা মেরে বের হয়ে যায়।
শনির আখড়া পৌঁছে চুরির টাকা থেকে ৪৫০ টাকা সিএনজি ভাড়া দেয় এবং বাকি টাকায় রক্ত লেগে থাকার কারনে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। পরদিন ১০ মে বিকালে তার সেজো খালাকে দাফন করার জন্য তার নানুর বাড়ি ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
এ ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তার নানুর বাড়ি থেকে তাকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত কিশোর স্কুল থেকে বহিষ্কৃত। হত্যার ঘটনায় শুধু সাইকেল কেনার উদ্দেশ্য ছিল নাকি অন্য কিছু সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। তবে টাকা চুরির ঘটনায় দুই খালাকে হত্যা করা ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে।