শেষ জিম্মিকে ফিরিয়ে নিয়েই রূপ বদল, কোনো যুদ্ধবিরতি নয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এডান আলেকজান্ডার নামে এক ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মুক্তি পাওয়ার পর গতকাল সোমবার (১২ মে) ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন তিনি।

হামাসের পক্ষ থেকে বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়, একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হামাসের যোগাযোগের পর এডানকে মুক্তি দেওয়া হলো।’

যদিও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেন ইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না এবং গাজায় সামরিক অভিযান জোরদারের পরিকল্পনা চলছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এরই মধ্যে খবরটি নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে রেডক্রসের হাতে এডান আলেকজান্ডারকে তুলে দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি ২১ বছর বয়সী এডানকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছে দিয়েছে। প্রায় ১৯ মাসের বন্দিদশার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হলো।

ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেবেন এবং পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হবেন।

আলেকজান্ডার ছিলেন হামাসের হাতে আটক শেষ জীবিত আমেরিকান। সূত্র উল্লেখ না করে ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানায়, তার শারীরিক অবস্থা ‘খারাপ’।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা টেলিভিশন একটি ছবি প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি মুখোশ পরা যোদ্ধা এবং একজন রেড ক্রস কর্মকর্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এবার তিনি সাধারণ পোশাকে ছিলেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, বন্দিমুক্তির জন্য ইসরায়েল তার অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এরপর গাজায় দুপুরে লড়াই বন্ধ হয়।

হস্তান্তরের পর পূর্ব গাজা শহরে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, তুফাহ পাড়ার একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া পরিবারদের ওপর গোলাবর্ষণে এক নারী নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

হামাস বলেছে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিয়েছে। এই সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন ট্রাম্প।

এডানের মুক্তির পর, সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, মৃত ভেবে নেওয়া আমেরিকান বন্দি এডান আলেকজান্ডারকে হামাস মুক্তি দিচ্ছে। দারুণ খবর!

এ দিকে নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক চাপ ও ট্রাম্পের রাজনৈতিক চাপেই এই মুক্তি সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, সোমবার নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

কাতার ও মিসর বলেছে, আলেকজান্ডারের মুক্তি নতুন যুদ্ধবিরতির আলোচনার পথে উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ। তবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেয়নি এবং সামরিক চাপেই হামাস এই মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে।

আর নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, গাজায় সম্প্রসারিত সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা চলবে।

আলেকজান্ডারের মুক্তির আগে ইসরায়েলি হামলায় গতকাল সোমবার গাজার একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া অন্তত ১৫ জন নিহত হয়।

সূত্র: রয়টার্স

শেয়ার করুন