রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে এ দুটি ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে হাজারীবাগের জিগাতলা এলাকায় খুন হয়েছেন শিক্ষার্থী সামিউর রহমান আলভী (২৭)। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম নামে আরেক যুবকসহ চারজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকায় ফটোগ্রাফার নূর ইসলামকে (২৫) খুন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে খুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনের সূত্রে জানা যায়, ধানমন্ডির ড. মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়তেন আলভী। তিনি হাজারীবাগে বিজিবির পাঁচ নম্বর গেট এলাকায় থাকতেন। তার বাবার নাম মশিউর খান পাপ্পু। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আলভী ও তার বন্ধুরা জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে চা পান করছিলেন। তখন তিন–চারজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে আলভীকে উদ্ধার করে প্রথমে নেওয়া হয় জাপান–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নিহত শিক্ষার্থীর মামী মাহী বেগম হাসপাতালে জানান, রাত ৯টার দিকে চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আশরাফুলের চিকিৎসা চলছে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ মাসুদ। তারাও বিজিবি পাঁচ নম্বর গেট এলাকায় থাকেন। আহত অপর তিনজনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি। কী কারণে এই হামলা স্বজনরা বুঝতে পারছেন না। তবে আহতদের দাবি, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তবে কী কারণে হামলা তা বলতে পারেননি তারা।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, একটি দল আড্ডা দেওয়ার সময় আরেকটি দল এসে তাদের ওপর হামলা করে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কী কারণে এই হামলা তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকার দুর্গা মন্দির গলিতে ৩২৭/১ নম্বর ভবনের সামনে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারান নূর ইসলাম। তার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজন কাঠি গ্রামে। বাবার নাম আবুল ফকির। ধানমন্ডির শংকর বাসস্ট্যান্ডের পাশে ভাই ওসমান গনির সঙ্গে থাকতেন নূর।
ওসমান গনি জানান, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ করতেন নূর। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তিনি দুর্গা মন্দির গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন হঠাৎ দুর্বৃত্তরা এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা ও দুই হাতে কোপায়। খবর পেয়ে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে তাকে নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালে। সেখানে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নূরের সঙ্গে থাকা দুটি ক্যামেরা দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, দুজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।