অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়তে থাকে। টানা ৯ মাস ধরে প্রতিমাসে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। গত মার্চেও তিন বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড। অন্যদিকে বাড়ছে রপ্তানি আয়ও। তারপরও কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। যদিও গত সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধ করায় এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১৭ মে পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে। আর বিপিএম-৬ হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
এর আগে গত ৮ মে পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী ছিল ২০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে, এতে রিজার্ভও বাড়বে।
রিজার্ভ গণনার দুই হিসাব বাদে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও একটি হিসাব রয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী, আইএমএফের এসডিআর খাত, ব্যাংকগুলোর ক্লিয়ারিং হিসাব ও আকুর পাওনা বাদ দিলে দেশে প্রকৃত ব্যয়যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, একটি দেশের অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ রিজার্ভ থাকতে হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময় আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। বিপিএম-৬ অনুযায়ী নিট রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয়, যেখানে মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিতে হয়।
এদিকে, চলতি মে মাসে প্রবাসী আয় ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। মাসটির প্রথম ১৭ দিনে এসেছে ১৬১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে আসছে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। রেমিট্যান্সের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসেও তিন বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স আসতে পারে।