আগামী ৭ জুন উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে পশুর হাটের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন শুধু কোরবানির পশু, বিক্রেতা ও ক্রেতার অপেক্ষা। তবে বেশ কয়েকটি হাটে কিছুসংখ্যক গরু উঠলেও ক্রেতাশূন্য বলা চলে।
বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন রাস্তায় বসা হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদুল আজহাকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর হাট বসেছে হাজারীবাগের লেদার গলিতে। হাজারীবাগ থানার সামনের মোড় থেকে শুরু করে ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজের সংলগ্ন সড়কের মধ্যে বাঁশ দিয়ে গরু বাঁধার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এখনো হাটটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাকেনা শুরু না হলেও এরই মধ্যে শতাধিক গরু হাটে আনা হয়েছে। ছোট-বড় গরু বিক্রির ইজারা সংগ্রহ করতে তৈরি করা হয়েছে ইজারাদারদের জন্য মঞ্চ। সড়কের তিন দিকে তিনটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
আরও দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন হাজারীবাগ অস্থায়ী হাটের প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে। যেসব বিক্রেতা গরু নিয়ে এসেছেন, তারা গরু রাখার জন্য উপরে ছাউনি দিচ্ছেন। বাঁশ দিয়ে ছাউনি তৈরি করে অস্থায়ীভাবে ত্রিপল দিয়ে ঝড়-বৃষ্টি আটকানোর চেষ্টা করছেন। তবে ইজারাদারদের পক্ষ থেকে সড়কের পাশে সারিবদ্ধ বাঁশ দিয়ে গরু বাঁধার ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
গরু বিক্রেতারা জানান, ঈদের ১০ দিন বাকি থাকতে তারা চলে এসেছেন। এখন বিক্রি হবে, তবে আগেভাগে চলে আসার কারণ হলো সড়কে যানজট এড়ানো। আর প্রথম দিকে গরুর দাম ভালো থাকে, সেটাও একটা বিষয়।
হাটের প্রস্তুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। এবারও তারা প্রস্তুত করে দিচ্ছেন, যেমন- বাঁশ, লাইট, টয়লেটের ব্যবস্থা। বিক্রেতারা এসে নিজেদের পছন্দমতো স্থান বেছে নিয়ে গরু বিক্রি করেন।
অস্থায়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির পশুর জন্য তৈরি করা শেড নানা রঙের ত্রিপলে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা নিজেরাই হাতুড়ি দিয়ে নিজেদের মতো করে শেড তৈরি করে নিচ্ছেন।
কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী রবিউল মিয়া বলেন, বৃষ্টি-বাদলের দিন তাই আগেভাগে চলে আসলাম। অনেকে আসছেন, দেখছেন। আবার কেউ তো দামও করছেন। তবে কেনার মতো দাম কেউ বলছেন না। ১২টি গরু নিয়ে এসেছি। দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দামের গরু আছে।
কুষ্টিয়ার আরেক গরু বিক্রেতা সুলায়মান বলেন, হাটে এখন গরুর সংখ্যা কম। বেচাকেনা নেই। সাতটি গরু এনেছি, দেখা যাক কী রাখছে ভাগ্যে।
কবে থেকে গরুর হাট জমতে পারে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামে হাট জমে ঈদের এক সপ্তাহ আগে, কিন্তু শহরের হাট জমে দুই থেকে তিন দিন আগে। এখন ১০ দিন বাকি, ক্রেতারা এখন দেখবে, বাজার বুঝবে, তারপর কিনবে।
তিনি আরও জানান, ঈদের খুব বেশি আগে ঢাকার ক্রেতারা কোরবানির পশু কেনেন না। আগে খোলামেলা বাড়ি ছিল, এখন তা নেই। আগে কিনলে গরু-ছাগল রাখার জায়গা কোথায়? তাই শেষ মুহূর্তে জমে গরু-ছাগলের হাট।
শেরপুর থেকে আসা গরু বিক্রেতা জব্বর হোসেন বলেন, যারা আসে তারা মূল ক্রেতা না। বাজার দেখতে অনেকে আসে। যারা আসে তারা দাম শুনে, বলে না। বিক্রি শুরু হলে বোঝা যাবে এবারের গরুর বাজার কেমন যাবে। আমরা তো সবসময় ভালো আশা করি। এখানে দুই পয়সা কামাই করতে আসছি। রাতদিন পরিশ্রম করে যদি দুইটা টাকা না পাই কী করব বলেন?