পশ্চিম তীরে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক করেতে দেবে না ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে একটি ঐতিহাসিক সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবসহ একাধিক আরব দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরা। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের এই সফর ও বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠক করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রোববার রামাল্লায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাঙ্গে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, মিশর এবং জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাক্ষাৎ করার কথা ছিল।

শুক্রবার ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সফর বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ—যারা আজও ৭ অক্টোবরের গণহত্যাকে নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানায়—তারা রামাল্লায় আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি উসকানিমূলক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের রাষ্ট্র নিঃসন্দেহে ইসরায়েলের হৃদয়ে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। ইসরায়েল এমন কোনো প্রচেষ্টায় অংশ নেবে না, যা তাকে ও তার নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হলেও পশ্চিম তীরের সীমান্ত ও আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ইসরায়েলের হাতে। ফলে কূটনীতিকদের প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি প্রয়োজন।

এর আগে এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান রোববার রামাল্লায় যাবেন। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখলের পর থেকে এটি হবে কোনো সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম পশ্চিম তীর সফর।

এমন এক সময় সফরের এই পরিকল্পনা সামনে এলো, যখন চলতি সপ্তাহেই ইসরায়েল পশ্চিম তীরে নতুন করে ২২টি বসতির অনুমোদন দিয়েছে। জাতিসংঘ এসব বসতিকে নিয়মিত অবৈধ ঘোষণা করে আসছে এবং এগুলোকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তিপ্রচেষ্টার অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ শুক্রবার এসব নতুন বসতির একটি এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে বলেন, ‘আমরা পশ্চিম তীরে একটি ইহুদি ইসরায়েলি রাষ্ট্র গড়ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেসব বিদেশি রাষ্ট্র কাগজে-কলমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তাদের প্রতি আমাদের বার্তা—সেই কাগজ ইতিহাসের আবর্জনার ঝুড়িতে ছুঁড়ে ফেলা হবে। আর ইসরায়েল রাষ্ট্র সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।’

আগামী জুনে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধান পুনর্জীবিত করতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে সৌদি আরব ও ফ্রান্স।

গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে সৌদি আরবের ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান স্পষ্ট করেছেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে না রিয়াদ।

সূত্র: এএফপি, টাইমস অব ইসরায়েল

শেয়ার করুন