বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি দরকার

সম্পাদকীয়

ফাইল ছবি

এবার অনেকটা আগেভাগেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আষাঢ়ের আগেই বন্যাভাব দেখা দিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায়। বন্যার পানি ছুঁই ছুঁই করছে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জেও। কয়েক দিন আগে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের কারণে উপকূল ভাগসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হলে লাখ লাখ মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। আর এই ধকল না কাটতেই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে দেশের একাধিক জেলায়। বিশেষ করে সিলেটের দুটি সীমান্ত এলাকা গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দুই উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সারা দেশের নদীগুলো ভরাট হয়ে গেলেও এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কার্যকর ও টেকসই পদক্ষেপ নেই। যদিও নদী খননের নামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়। এমন বাস্তবতায়,  ভারী বৃষ্টি স্থায়ী হোক বা না হোক সরকারকে সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।

বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ২০২৪ সালের আগস্টে গ্রান্থাম রিসার্চ ইন্সটিটিউট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রমেন্ট ও সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিসি থেকে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ মানুষ বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া ১৯৭১ থেকে ২০১৪ সাল অর্থাৎ ৪৩ বছরে হওয়া ৭৮টি বন্যায় ৪১ হাজার ৭৮৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আর এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১২শ ২০ কোটি ডলারের।

বন্যা মোকাবিলায় সরকারি সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও নির্দেশনা মেনে চললে নিরাপদ থাকা সহজ হয়। বন্যা শুরুর আগেই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, থানা বা উপজেলা প্রশাসনের হটলাইন নম্বর সংরক্ষণ করে রাখা দরকার। কোথায় আশ্রয়কেন্দ্র আছে, কীভাবে সেখানে পৌঁছাতে হবে- এসব তথ্য আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। সর্বোপরি, সবাইকেই  প্রস্তুত থাকতে হবে কোথাও বন্যা দেখা দিলে যাতে আক্রান্ত মানুষগুলোকে দ্রুত নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়।

শেয়ার করুন