এপ্রিলে নির্বাচন অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পলিমাটির যে বাতাস এ বাতাস অত্যন্ত পরিশোধিত বাতাস। এ বাতাসের মাঝে এমন কিছু বঙ্কিম বাতাসও প্রবাহিত হয়। ক্ষমতায় আসলেই চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখে। যেটি দেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, যেটি দেখেছিলেন শেখ হাসিনা, তেমনি আবারও বঙ্কিম বাতাসটা অন্তর্বর্তী সরকারের শরীরেও লাগছে কিনা। এটি মানুষের কাছে বড় ধরনের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন দু একজন লোকের কথায় বা দু একটি রাজনৈতিক দলের কথায় প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন। এপ্রিল মাসেতো প্রচণ্ড খরতাপ থাকে, ঝড় বৃষ্টি হয়, এসএসসি পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা থাকে। সে সময় কেবল রোজার ঈদ শেষ হবে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে রমজানে প্রচারণা চালাতে হবে। রোজা রেখে প্রচারণা চালাবে কিভাবে। মানুষ রোজা রাখবে না নির্বাচনের প্রচারণা করবে। এপ্রিলে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত এটি অর্বাচীনের মতো কাজ, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বলে জনগণ মনে করে।

আজ রোববার জাতীয়তাবাদী ভ্যান শ্রমিক ও রিকশা শ্রমিক দলের উদ্যোগে খাবার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ছাত্রজনতার আত্মদানতো ছিল যে গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা সিন্ধুকের ভেতরে তালাবদ্ধ করেছিল, সে গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করার জন্য। ১৫ -১৬ বছর এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, সমস্ত অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ইতিহাসকে দুপায়ে ডলেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রতের একটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আমি আমার বন্ধুর সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি। তবে অধিকাংশ মানুষ যাকে সমর্থন করবে, ভোট দিবে তারাই বিজয়ী হবে। এটিই নির্বাচন। এজন্য আন্দোলন করেছে, এজন্য সংগ্রাম করেছে। এটি বলতে গিয়ে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ হাজারো মানুষ অদৃশ্য হয়েছে। কারণ তারা গণতন্ত্র চেয়েছে। তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে, কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছে, এচাওয়াটাই তাদের অপরাধ হয়েছে। শেথ হাসিনা তাদেরকে গুম করেছে। আরও কত যুবককে বিচার বহির্ভূত হত্যা করেছে। কারও লাশ নদীর ধারে, খালের ধারে ফেলে দিয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে। কাউকে আয়না ঘরে বন্দি করে রেখেছে। সব কিছুর মূলে ছিল গণতন্ত্র। আর গণতেন্ত্রর মূল উপাদান হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের খুব দুর্ভাগ্য। গণতন্ত্র নিজেই এক দুর্ভাগ্যের মধ্যে পড়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েই যেন গড়িমসি।

তিনি বলেন, আন্দোলনে যারা গুম খুন হয়েছেন তাদের সমর্থন কিন্তু ড. ইউনূস সাহেব পেয়েছেন। কিন্তু কোন সূতার টানে কার পারামর্শে তিনি নির্বাচন নিয়ে কেন যেন টানা হেচঁড়া করেছেন। নির্বাচনই নিজেই কেন জানি একটা টানাপোড়েনের মধ্যে আছে। এ পরিস্থিতিতো হওয়ার কথা নয়। আমরা সব না বুঝলেও এটি বুঝি। তিনি বলে দিলেন জাপানে গিয়ে একটি দল ছাড়া কেউ নির্বাচন চায় না। কিন্তু একটি দল তার আয়তন কত, তার প্রশস্ত কতটুকু তাকি তিনি জানেন না ,অবশ্যই জানেন, যে ওই দলটার জনসমর্থন কতটুকু। তার মতো দায়িত্বশীল কি করে এসব কথা বলেন? এর পরেও আপনি দেখেন কত রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছেন। তিনি আবারও ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানান।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক জহির রায়হানের সভাপতিত্বে ও আফজাল হোসেনের পরিচালনায়

আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহুবুব ইসলাম, ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের নেতা আরিফুর রহমান তুষার।

শেয়ার করুন