লন্ডনে অবস্থানরত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা উঠেছেন ডরচেস্টার হোটেলে। বিলাসবহুল এই হোটেলটিতে থাকতে রিজার্ভ করা হয়েছে ৩৭টি রুম। যেখানে চাররাত কাটাতে সরকারের ব্যয় ২ লাখ ১০ হাজার ৩২৫ ব্রিটিশ পাউন্ড বা সাড়ে ৩ কোটি টাকা (১ পাউন্ড সমান ১৬৬ টাকা হিসেবে)। আর হোটেলটির সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল কক্ষটির (যেটাতে থাকছেন প্রধান উপদেষ্টা) দৈনিক খরচ ৬ হাজার ৪৫ পাউন্ড বা ১০ লাখ টাকা। সেই হিসেবে শুধু প্রধান উপদেষ্টার কক্ষেই বিল গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশি টাকায় ৪০ লাখ টাকা।
নিজের সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে হোটেলের বিলের কাগজসহ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে।
ফেসবুক পোস্টে জুলকারনাইন লেখেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.ইউনূস ও তাঁর সফর দল গত ৯ জুন যুক্তরাজ্য সফরে আসেন। তাদের অবস্থানের জন্য লন্ডন শহরের অন্যতম ব্যয়বহুল দ্য হোটেল ডরচেস্টারে চার রাতের জন্যে ৩৭টি রুম রিজার্ভ করা হয়। তাদের হোটেল বিলের একটি কপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়— ৩৯ জনের সফরদল ৪ রাত অবস্থানের জন্যে ব্যয় করেছে ২,১০,৩২৫ ব্রিটিশ পাউন্ড বা প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল কক্ষ যেখানে অবস্থান করেন প্রধান উপদেষ্টা, সেটি দৈনিক ৬,০৪৫ পাউন্ড বা ১০ লাখ টাকায় ভাড়া করা হয়। কেবল তার কক্ষেরই বিল আসে ৪০ লাখ টাকা বা ২৪,১৮০ পাউন্ড।’
সাংবাদিক জুলকারনাইন আরও লিখেছেন, ‘দেশের সরকার প্রধান অবশ্যই বিদেশ সফরে যেতে পারেন, তার নিরাপত্তা ও মর্যাদা বিবেচনায় যেকোনো শীর্ষ হোটেলেই তিনি ও তার দল অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু তার এই সফরে বাংলাদেশ কী পেল বা কীভাবে লাভবান হলো সেটা প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এখানে দ্বিপাক্ষিক কোনো বৈঠকের জন্যে আসেননি, সেটা তো নিশ্চিত। ব্রিটিশ রাজার কাছ থেকে ব্যক্তিগত পুরস্কার গ্রহণ করেছেন কেবল। আর আজ বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানা যায়নি।’
‘এছাড়াও, লন্ডনে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি ফ্লাইট থাকা সত্ত্বেও তিনি ও তার দল ভ্রমণ করেছেন এমিরেইটস এয়ারে, এমিরেইটসের ফার্স্ট ক্লাস ও বিজনেস ক্লাসের ভাড়াও বিমানের তুলনায় বেশি। আর সরকার প্রধান হিসেবে তিনি দেশের ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ারে ভ্রমণ করবেন এমনটাই তো কাম্য?’
ঢাকা ছাড়ার পর মঙ্গলবার (১০ জুন) এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জুলকারনাইন পোস্টে প্রায় পাঁচ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন। মাসুদ রানা খান মন্তব্য করেছেন, ‘টাকা তো এদেশের আপামর জনগণের। টাকা তো আর তার নই; তাই খরচ করতে চিন্তা কিসের।’
জুনায়েত রহমান রিফাত লিখেছেন, ‘সবাই একই রকম, মুদ্রার এপিট আর ওপিট।’
এমডি আরাফাত লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় অপচয় বন্ধ করা উচিত।’