বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তৃতীয় দিনেই রোমাঞ্চের অপেক্ষা

মত ও পথ ডেস্ক

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা। সংগৃহীত ছবি

পরিসংখ্যান বলছিল– ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক লর্ডসে টেস্টের প্রথম ১০-১৫ ওভারে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ব্যাটিংয়ে থাকা দল। এরপর ধীরে ধীরে ব্যাটাররা মানিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও, চলমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার শিরোপানির্ধারণী ম্যাচের দুই দিনেই পতন হয়েছে ২৮ উইকেট। ফলে তৃতীয় দিনেই নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে টেস্ট চ্যাম্পিয়ন।

ফাইনালের দুই দিনেই ১৪টি করে উইকেট হারিয়েছে উভয়দল। ফলে বাকি ১২ উইকেট নিয়ে আজ (শুক্রবার) তারা তৃতীয় দিনের খেলায় নামবে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৪৪ রান। এই পুঁজি দেখতে ছোট মনে হলেও, প্রথম ইনিংসে চোখ রাখা ব্যক্তি মাত্রই এর তেজ বুঝতে পারবেন। প্রথম ইনিংসে অজিদের করা ২১২ রানের বিপরীতে প্রোটিয়ারা গুটিয়ে যায় ১৩৮ রানে। ফলে প্যাট কামিন্সের দলের বর্তমান লিড দাঁড়াল ২১৮–তে।

এই পুঁজিও যে জয়ের জন্য যথেষ্ট হতে পারে অস্ট্রেলিয়াকে সেই আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে লর্ডসের পরিসংখ্যান। এখন পর্যন্ত অভিজাত এই ভেন্যুতে কেবল চারবার ২০০–রানের বেশি লক্ষ্য পেরোনোর নজির রয়েছে। ২০০৫ সালের পর কেবল একবারই সেই দৃশ্য দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। আবার দক্ষিণ আফ্রিকা যদি অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য তাড়ায় সফল হয় সেটি হবে এই ম্যাচের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ইংল্যান্ডে মাত্র ৯ বার টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা দল ম্যাচের সর্বোচ্চ পুঁজি স্কোরবোর্ডে পায়। এর মধ্যে জিতেছে কেবল ৩ দল (সর্বশেষ ২০১৯, হেডিংলি)।

টেম্বা বাভুমার আফ্রিকা নিজেদের ইনিংসে যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল, মনে হচ্ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া টানা দ্বিতীয় শিরোপা সহজেই হাতে তুলবে। বিশেষত তাদের স্কোরবোর্ডে তখনই যে ৭৪ রানের লিড যোগ হয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে অজিদের সমান চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডিরা। যদিও ৭৪ রানের বদৌলতে অস্ট্রেলিয়া লড়াইয়ের পুঁজিও পেয়ে গেছে বললে ভুল হবে না!

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শুরু থেকেই প্রোটিয়া পেসারদের তোপের মুখে পড়ে। ১১তম ওভারেই পরপর উসমান খাজা (৬) ও ক্যামেরন গ্রিনকে (০) বিদায় করেন রাবাদা। প্রথম ইনিংসেও ঝড় তোলা এই পেসারকে এবার যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন জানসেন-মুল্ডার ও এনগিডি। অজিদের টপঅর্ডারে বলার মতো রান করতে পারেননি কেউই। কেবল মার্নাস লাবুশেন (২২) ও স্টিভেন স্মিথ (১৩) দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পেরেছেন। এ ছাড়া ট্রাভিস হেড (৯) ও ব্যু ওয়েবস্টারও (৯) যথারীতি পরিচয় দিয়েছেন ব্যর্থতার।

বিপর্যস্ত মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার কূল রক্ষা হতো একটি কার্যকর পার্টনারশিপে। অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ক জুটি (৬১) তেমনই কিছু ঘটিয়েছেন। ক্যারি ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নিলেও, ততক্ষণে দলীয় লিড দুইশ ছাড়িয়ে গেছে। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার ৫০ বলে ৫টি চারের বাউন্ডারিতে ৪৩ রান করেন। দিন শেষে স্টার্ক অপরাজিত আছেন ১৬ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন রাবাদা ও এনগিডি। জানসেন-মুল্ডার একটি করে শিকার ধরেন।

শেয়ার করুন